সেই ড্রোন। নিজস্ব চিত্র
প্রায় তিন মাস আগে কলকাতা বিমানবন্দরের পণ্য বিভাগে আসা চারটি ড্রোন নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে শুল্ক দফতর। কলকাতার যে ব্যবসায়ী সেই ড্রোনগুলি আনিয়েছিলেন, তাঁকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
সম্প্রতি এই ড্রোন নিয়ে বিভিন্ন মহলে হইচই শুরু হয়। এমনকি, ড্রোন আনানোর খবর পেয়ে সিবিআইয়ের একটি দলও সেই ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরও ড্রোন নিয়ে খোঁজখবর শুরু করে।
শুল্ক কর্তারা জানিয়েছেন, কলকাতায় সচরাচর যে ধরনের পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়, তার মধ্যে ড্রোন পড়ে না। তাই এই ড্রোন নিয়ে সতর্ক ছিল শুল্ক দফতর। বছরখানেক আগে বিদেশ থেকে সঙ্গে করে ড্রোন নিয়ে এসে কলকাতা বিমানবন্দরে শুল্ক দফতরের জেরার মুখে পড়েন কয়েক জন যাত্রী। তাঁরা বৈধ বা গ্রহণযোগ্য নথি দেখাতে না পারায় শুল্ক দফতর বেশ কয়েকটি ঘটনায় ড্রোন বাজেয়াপ্তও করে। এক শুল্ক কর্তার কথায়, “ড্রোন আনা নিয়ে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। ড্রোন আনতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। সেই লাইসেন্স বা অন্য কাগজপত্র ঠিক থাকলে আমরা ছেড়ে দিই।”
সাম্প্রতিক একটি ঘটনায় গত জুলাই মাসে হংকং থেকে চারটি ড্রোন আসে পণ্য বিভাগে। কলকাতার যে ব্যবসায়ী সেই ড্রোন আনিয়েছিলেন, তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। শুল্ক দফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে, সেই ব্যবসায়ীকে ডাকা হলেও তিনি অনেক দেরি করে যোগাযোগ করেন তাঁদের সঙ্গে। তত দিন বিমানবন্দরের পণ্য বিভাগেই ওই চারটি ড্রোন পড়ে ছিল। সেপ্টেম্বর মাসে ওই ব্যবসায়ী যোগাযোগ করে ড্রোন সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দিলে গত ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁকে নিয়ে বিমানবন্দরে যান শুল্ক বিভাগের গোয়েন্দারা এবং সরেজমিন তাঁর কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হয়।
সূত্রের খবর, কোনও এক সেনা অফিসারের অনুরোধে তিনি ওই ড্রোন আনিয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন সেই ব্যবসায়ী। প্রশ্ন উঠেছে, কোনও সেনা অফিসারকে যদি সরকারি কাজের জন্য ড্রোন আনাতে হয়, তা হলে তিনি সরকারি ভাবেই তা আনাবেন। এক জন ব্যবসায়ীকে দিয়ে কেন আনাবেন? ওই ব্যবসায়ী যে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন, তার মধ্যে ভুয়ো কিছু নথিও রয়েছে বলে কোনও কোনও মহল থেকে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
শুল্ক কর্তারা অবশ্য এই সমস্ত প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, কলকাতার ওই ব্যবসায়ী যে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখার জন্য তাঁরা দিল্লিতে পাঠিয়েছেন। সেখান থেকে জবাব এলে তবেই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।