প্রতীকী ছবি।
বন্ধুদের সঙ্গে নবমীর রাতে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়া যুবক। দশমীর বিকেলে বরাহনগরের টবিন রোডের ভট্টাচার্য পাড়ায় বাড়ি থেকে কিছু দূরের পুকুরে মিলল ওই যুবকের দেহ! মৃতের নাম সৌরভ সেনগুপ্ত (২২)। তিনি সোদপুরের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের চূড়ান্ত সিমেস্টারের ছাত্র ছিলেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, ময়না-তদন্তের পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণ মহাশ্মশানে সৌরভের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। ঘটনার তদন্ত নেমেছে বরাহনগর থানা। পরিবারের দাবি, সাঁতার না জানায় কোনও দিন ওই পুকুরে নামেননি যুবক।
তদন্তে জানা গিয়েছে, সৌরভের বাবা কেব্ল ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ সেনগুপ্তের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। মাস চারেক আগে এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। নবমীর রাতে সৌরভ মায়ের থেকে টাকা নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরোন। জানান, দশমীর সকালে ফিরবেন। রাতে সৌরভকে তাঁর বাবা-মা ফোন করলে সেটি বন্ধ পান। অনিরুদ্ধবাবু বলেন, “ফোন বন্ধ থাকায় চিন্তা হচ্ছিল। ভেবেছিলাম হয়তো কোনও বন্ধুর বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছে।” ভোরে ফোন করায় সেটি বাজলেও কেউ ধরেননি বলে জানান পরিজনেরা।
তাঁরা জানান, পরে কয়েক বার রিং হওয়ায় এক জন ফোনটি ধরে দাবি করেন, সেটি ভট্টাচার্য পাড়ার পুকুর ধারে আছে। তড়িঘড়ি তাঁরা সেখানে গিয়ে দেখেন, মোবাইলটি ঘাটের কাছেই রয়েছে। এর পরেই বরাহনগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে সৌরভের পরিবার।
ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে ওই পুকুর থেকেই মেলে যুবকের দেহ। তাঁর মানিব্যাগ ও গলার হার মেলেনি বলে দাবি পরিবারের। যে বন্ধুদের সঙ্গে সৌরভ ঘুরতে বেরিয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পরিজনেরা। বন্ধুদের দাবি, রাত দেড়টা নাগাদ তাঁরা সৌরভকে বাড়ির গলির সামনে নামিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁকে সকলে শুভরাত্রি জানিয়ে সৌরভের বাড়ি যাওয়ার ছবিও ফোনে তুলে রেখেছিলেন।
পরিবারের প্রশ্ন, যিনি বরাবর জল থেকে দূরে থাকেন, তিনি আচমকা পুকুরে নামবেন কেন? যদি কোনও ভাবে জলে পড়েই যাবেন, তা হলে মোবাইল পুকুর ধারে কেন? যুবকের মামা বাচস্পতি ভট্টাচার্য বলেন, “যদি হাত-পা, মুখ ধুতে পুকুরে নেমেও থাকে, তা হলে তো জুতো খুলে রাখত। কিন্তু সব কিছু পরে শুধু মোবাইল রেখে সৌরভ জলে নেমে গেল কী ভাবে! বিষয়টি স্বাভাবিক লাগছে না।”
ময়না-তদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ব্যারাকপুর সিটি পুলিশের এক কর্তার কথায়, “কী ভাবে ওই যুবক জলে পড়ে গেলেন, দেখা হচ্ছে। তদন্তে কোন দিকই বাদ রাখা
হচ্ছে না।”