নজরে পুরভোট, দাবি পূরণে উদ্যোগী প্রশাসন

পুরভোটের ঢাকে কাঠি পড়তে ঠিক এক বছর। তার আগেই বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণে উদ্যোগী হল বিধাননগর পুর প্রশাসন। সল্টলেকের ইই ব্লকে ব্লাডব্যাঙ্ক, মর্গ ও একটি বৃদ্ধাবাস গড়ার পরিকল্পনা করেছে তারা। এই তিন প্রকল্পে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। তিনটি প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যে রাজ্য জমির অনুমোদনও দিয়েছে বলে পুরপ্রশাসনের দাবি।

Advertisement

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৪ ০১:২১
Share:

পুরভোটের ঢাকে কাঠি পড়তে ঠিক এক বছর। তার আগেই বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণে উদ্যোগী হল বিধাননগর পুর প্রশাসন। সল্টলেকের ইই ব্লকে ব্লাডব্যাঙ্ক, মর্গ ও একটি বৃদ্ধাবাস গড়ার পরিকল্পনা করেছে তারা। এই তিন প্রকল্পে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। তিনটি প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যে রাজ্য জমির অনুমোদনও দিয়েছে বলে পুরপ্রশাসনের দাবি।

Advertisement

সল্টলেক থেকে নিউ টাউন, রাজারহাট-সহ পূর্ব কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশের বাসিন্দাদের অভিযোগ ছিল, রক্তের জন্য কলকাতা-সহ নির্দিষ্ট কয়েকটি সরকারি জায়গাই সম্বল। না হলে কয়েক গুণ বেশি টাকা দিয়ে বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক ভরসা। কিন্তু তা-ও হাতের কাছে নয়। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা বিধাননগর পুর-প্রশাসনের কাছে ব্লাড ব্যাঙ্কের দাবি জানাচ্ছিলেন। কিন্তু নানা প্রশাসনিক জটিলতায় তা হয়নি। অবশেষে ইই ব্লকের ৫৫ নম্বর প্লটে ব্লাড ব্যাঙ্ক তৈরির পরিকল্পনা করেেছে পুরসভা। এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতরের সহযোগিতাও নেওয়া হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।

পাশাপাশি, বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের চাহিদাকে সমর্থন করে মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য একটি মর্গ তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে বিধাননগর পুরসভা। চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, অনেকেরই সন্তানেরা বিদেশে থাকেন। তাই বহু মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে মৃতদেহ সংরক্ষণের একটি ব্যবস্থা তৈরির দাবি জানাচ্ছিলেন। এ ছাড়া, রক্তের প্রয়োজনে বাসিন্দাদের প্রায়শ ছুটতে হয় কলকাতায়। রক্ত জোগাড় করতে হিমশিম খান তাঁরা। তাই উপনগরীতেই ব্লাড ব্যাঙ্কের দাবি উঠেছিল। কৃষ্ণাদেবী বলেন, “পুর-নির্বাচনের সময়ে এই দাবিগুলি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। এ বার সেই দাবি পূরণ করা সম্ভব হবে। এতে সল্টলেকের পাশাপাশি পূর্ব কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারাও উপকৃত হবেন।”

Advertisement

ইই ব্লকের ৫৫ নম্বর প্লটে এই দু’টি প্রকল্প কার্যকর করতে ৩-৪ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে বলে পুরকর্তারা জানান। বাসিন্দাদের আরও একটি দাবি পূরণে সচেষ্ট হয়েছে পুরসভা। তা হল বৃদ্ধাবাস তৈরি। ইই ব্লকেরই ৫৬ নম্বর প্লটে তৈরি হবে বৃদ্ধাবাস। পুরসভা সূত্রের খবর, সেখানে প্রায় ২০০ জন থাকতে পারবেন। প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০ কোটি। আবাসিকদের থেকে সংগৃহীত অর্থেই প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। চেয়ারম্যান পারিষদ (পূর্ত) অনুপম দত্ত জানান, তিনটি প্রকল্প গড়তে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার জমির অনুমোদন দিয়েছে। প্রকল্প রূপায়ণে একটি কমিটি তৈরি হবে।

পুরসভার পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের একটি সংগঠনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। দীর্ঘ দিন বাসিন্দারা এই দাবি জানাচ্ছিলেন।’’ তবে সল্টলেকে বিরোধীবর্গের একাংশের অভিযোগ, পুর-পরিকল্পনা প্রশংসনীয় ঠিকই। কিন্তু সাধারণ পরিষেবা দিতেই যেখানে হিমশিম খাচ্ছে তারা, সেখানে এমন বড় প্রকল্প কী ভাবে কার্যকর হবে, তা নিয়ে সংশয় আছে। যদিও পুরকর্তাদের দাবি, পুরসভা একক ভাবে এই প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে। প্রয়োজনে সরকারের সহযোগিতা নেওয়া হবে। আর্থিক সমস্যা বিবেচনায় রেখেই প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement