Kolkata

মোটরবাইক-গাড়ি ধাক্কা, দুর্ঘটনায় ফের মৃত্যু

মোটরবাইকের সঙ্গে অ্যাপ-ক্যাবের ধাক্কায় মৃত্যু হল বছর তিরিশের এক যুবকের। এ ক্ষেত্রেও মৃতের পরিবারের আক্ষেপ, ‘‘মোটরবাইকে থাকার সময়ে মাথায় হেলমেট থাকলে বেঁচে যেত ছেলেটা।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ১৮:০৩
Share:

প্রতীকী চিত্র

শহরে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলে নবতম সংযোজন হল সোমবার রাতে। মোটরবাইকের সঙ্গে অ্যাপ-ক্যাবের ধাক্কায় মৃত্যু হল বছর তিরিশের এক যুবকের। এ ক্ষেত্রেও মৃতের পরিবারের আক্ষেপ, ‘‘মোটরবাইকে থাকার সময়ে মাথায় হেলমেট থাকলে বেঁচে যেত ছেলেটা।’’

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে সুকিয়া স্ট্রিট এবং এপিসি রোডের মোড়ে। মৃতের নাম অরিন্দম পাঠক (৩০)। বাড়ি আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকার ৮ নম্বর রঘুনাথ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে অ্যাপ-ক্যাবের ওই চালক।

কী ঘটেছিল ওই দিন?

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ দুই বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন অরিন্দম। রাত পৌনে ১টা নাগাদ তাঁদের সঙ্গেই একটি মোটরবাইকে করে ফিরছিলেন তিনি। পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে জানতে পেরেছে, রামমোহন সরণি থেকে তীব্র গতিতে এপিসি রোড পার হচ্ছিলেন তাঁরা। সে সময় শিয়ালদহ থেকে মানিকতলার দিকে যাচ্ছিল একটি গাড়ি। সেটিরও গতি অনেকটাই জোরে ছিল বলে পুলিশ জনিয়েছে। রাস্তার উল্টো দিকে সুকিয়া স্ট্রিটের কাছে প্রায় পৌছে গিয়েছিল মোটরবাইকটি, সেই সময়েই ওই গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে মোটরবাইকের। আরোহীরা ছিটকে পড়েন গাড়ির সামনের কাচে। ওই অবস্থাতেই গাড়িটি সামনের দিকে এগিয়ে আসে। গাড়ি থামার পরে হাতখানেক দূরে ছিটকে পড়েন তাঁরা।

পুলিশ জানায়, তখনই মাথা ফেটে গিয়েছিল অরিন্দমের। স্থানীয় বাসিন্দা রণদীপ দাস বলেন, ‘‘শব্দ শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় তিন জন পড়ে রয়েছে। ভাল করে দেখে বুঝতে পারি ওরা সকলেই আমার পরিচিত।’’ এর পরেই পুলিশে খবর দেন তিনি। তত ক্ষণে আশপাশ থেকে লোকজন ভিড় করেছেন। সকলকে আনা হয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই অরিন্দমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। দু’টি গাড়িকে আটক করে পুলিশ। দীপঙ্কর দাস আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।

তদন্তে জানা গিয়েছে, মোটরবাইকটি চালাচ্ছিলেন দীপঙ্কর দাস। মাঝখানে বসেছিলেন অরিন্দম। দুর্ঘটনার পরে অরিন্দম ছিটকে পড়েন গাড়ির ওপরে। চলন্ত অবস্থায় গাড়িটি কিছুটা এগিয়ে আসে। ফের তিনি রাস্তায় ছিটকে পড়েন। মঙ্গলবার সকালে অরিন্দমের বাবা অভীক পাঠক বলেন, ‘‘আমার ছেলে মোটরবাইক চালাতেই জানত না। কাল রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আমার সঙ্গে ছিল। তার পরেই বেরিয়ে যায়। রাত দু’টো খবর পেলাম সব শেষ।’’ তাঁর আক্ষেপ, মাথায় হেলমেট থাকলে বেঁচে যেত ছেলেটা!

কলকাতা পুলিশের তথ্য থেকে দেখা গিয়েছে, শুধু অক্টোবর মাসেই কলকাতা শহরে পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন প্রায় কুড়ি জন। মোটরবাইক চালানোর সময়ে চালক ও আরোহীকে হেলমেট পড়ার নিদান দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে সচেতনতার প্রচার করছে পুলিশও। কিন্তু তা সত্ত্বেও হুঁশ ফিরছে না কারওর। ফের এই দুর্ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল, সচেতনতার প্রচার চললেও আখেরে তার কোনও প্রভাবই পড়ছে না শহরবাসীদের একাংশের উপরে।

আরও পড়ুন: ফাটলো শব্দবাজি, সঙ্গে গাড়ি ভাঙচুর

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement