ফাইল চিত্র।
কোভিডে আক্রান্ত হয়ে গত এপ্রিলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন প্রবীণ দম্পতি। সেখানেই মৃত্যু হয় বৃদ্ধের। কিন্তু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পরেও বৃদ্ধার ছেলে তাঁকে ঘর ছেড়ে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ। সল্টলেকের এফডি ব্লকের ঘটনা। বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, বৃদ্ধাকে তাঁর ঘরে ফিরিয়ে দিতে দু’পক্ষকে মুখোমুখি বসিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছে বিধাননগর (দক্ষিণ) থানার পুলিশ। মায়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা চলবে না— এই মর্মে ছেলের থেকে মুচলেকাও আদায় করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘর ফিরে পেতে ছেলের বিরুদ্ধে বৃদ্ধা লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়ার পরে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয় বিধাননগর (দক্ষিণ) থানা। অন্য দিকে, থানার ওসি অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে হেনস্থার অভিযোগ জানান বৃদ্ধার ছেলে। পরে অবশ্য তিনি সেটি প্রত্যাহার করেন বলে খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, এফডি ব্লকের ওই বাড়িটির একতলার ঘরে থাকতেন ওই প্রবীণ দম্পতি। অন্য ঘরে থাকেন তাঁদের ছেলে ও তাঁর পরিবার। দোতলায় মেয়ে-জামাই বসবাস করেন। এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় ওই প্রবীণ দম্পতিকে একসঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর প্রথমে তাঁর স্ত্রীকে দেওয়া হয়নি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে মেয়ের থেকে সেই খবর জানতে পারেন বৃদ্ধা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরে বাড়ি ফিরে ছেলে ও তাঁর পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে বৃদ্ধা স্বেচ্ছায় চিলেকোঠার ঘরে ১৪ দিন আলাদা থাকেন। কিন্তু সমস্যা
শুরু হয় ১৪ দিনের পরে। অভিযোগ, এর পরে বৃদ্ধা তাঁর নিজের ঘরে ফিরতে পারেননি। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে তিনি
জানিয়েছেন, তাঁর অনুমতি ছাড়াই ছেলে ও পুত্রবধূ ওই ঘরে তালা দিয়ে দেন। এমনকি, জিনিসপত্রও আটকে রাখা হয়। পরে ঘর খুলে দিলেও বৃদ্ধাকে সেখানে রাতে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। বৃদ্ধার পরিবার সূত্রের খবর, আপাতত দোতলায় মেয়ের কাছেই রয়েছেন তিনি।
শনিবার ওই পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘ওই ঘরে বৃদ্ধার স্বামীর স্মৃতি রয়েছে। কোভিডে মৃত্যু হওয়ায় স্বামীকে শেষ দেখার সুযোগটুকুও পাননি তিনি। তাই উনি ওই ঘরেই থাকতে চাইছেন।’’
যদিও এ দিন বৃদ্ধার ছেলের দাবি, ‘‘পুলিশি হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হয়েছে। মা তাঁর ইচ্ছেমতো নিজের ঘরে থাকতে পারেন। দোতলাতেও থাকতে পারেন।’’