বিশেষ উদ্যোগ শালিমারের
জীবন কখনই একই রকম থাকে না। প্রতি দিনের রোদ ঝলমলে সূর্য ওঠা সকাল, আগের দিনের থেকে খানিকটা হলেও আলাদা হয়। কারণ আমরা প্রতিদিন অল্প অল্প করে মহামূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদকে ক্ষয় করতে ব্যস্ত। আমরা প্রত্যেকেই বেঁচে থাকি আজকের দিনের জন্য। আগামীকাল যে বিপন্ন হচ্ছে, সেদিকে খেয়াল থাকে না কারও। আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এখনও এই বিষয়ে অবগত নন। তাঁরা বুঝতে পারছেন না যে কার্যকর কৌশল ও সচেতন প্রচেষ্টা ছাড়া শুধু মানুষই নয়, পৃথিবীর প্রত্যেক প্রজাতি শীঘ্রই বিপন্ন প্রজাতিতে পরিণত হবে।
এই সঙ্কটের কথা মাথায় রেখেই এই বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এক অনন্য পদক্ষেপ করল শালিমার। তারা বিশ্ব পরিবেশ দিবস বার্ষিক উদযাপনের ঠিক আগে, হাওড়ার শ্রী রামকৃষ্ণ সংঘ অনাথ আশ্রম সম্মিলিতভাবে একটি অঙ্গীকার নিয়েছিল — “পরিবর্তন শুরু হোক এবং সেই পরিবর্তনে সামিল হন আপনিও”। তাদের সঙ্গে নিয়েই একটি সচেতনমূলক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এর পরে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের মাধ্যমে এদের প্রত্যেকের মারফৎ একটি পরিবর্তনের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হয়। এই নবীন প্রজন্মের প্রত্যেকে যেন উন্মুক্ত কণ্ঠস্বরের মতো। শালিমারের ভরসা, যাদের আওয়াজ ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বজুড়ে।
শালিমার কেমিক্যাল ওয়ার্কার্স লিমিটেডের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। যারা বিগত পাঁচ দশক ধরে প্রাকৃতিক পণ্য তৈরির সঙ্গে জড়িত। সেই শুরু থেকেই সংস্থার লক্ষ্য ছিল প্রকৃতিবান্ধব জীবনযাত্রার প্রচার।
এই প্রসঙ্গে একটি প্রশ্ন প্রায়শই ঘোরাফেরা করে। তা হল, আর কত দিন পর্যন্ত আমরা প্রকৃতি প্রদত্ত সব জীবনদায়ী উপাদানগুলি ব্যবহার করে যেতে পারব? উত্তরটা বেশ ভয়ঙ্কর। অঙ্কের হিসেবে আমরা প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি। এখনই সচেতন না হলে অচিরেই শেষ হতে পারে প্রাণীজগতের একাংশ।
এই প্রসঙ্গে সংস্থার মুখপাত্র জানিয়েছেন যে এই অস্থির সঙ্কটকালীন অবস্থা আদতে শালিমারকে বৃহত্তর পরিসরে তাদের সামাজিক প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য যথেষ্ট প্রেরণা যোগাবে। জানা গিয়েছে, শালিমার খুব শীঘ্রই “মাদার নেচার, আওয়ার অনলি ফিউচার” শিরোনামে একটি ক্যাম্পেইন শুরু করতে চলেছে। যা অরণ্য বিনাশ, প্লাস্টিক দূষণ, গ্লোবাল ওয়ার্মিং, ইত্যাদির মতো সমূহ বিপদের সম্ভাবনা এড়াতে দেশের শিশু শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী পরামর্শ গ্রহণ করবে। এই নতুন মননে জন্ম নেওয়া সেরা উদ্ভাবনী পরামর্শ ও পরিকল্পনাগুলিকে আসন্ন বছরেগুলিতে বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়িত করা হবে। এবং সেটি স্পনসর করবে শালিমার নিজে।
সংস্থার মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, “বিশ্বকে আগামী দিনে সুস্থ করে তোলার জন্য নবীন প্রজন্মকে সক্রিয়ভাবে এই সব কাজে জড়িয়ে ফেলা অত্যন্ত জরুরি। আজকের এই ইভেন্টটি ছিল তারই একটি ছোট পদক্ষেপ মাত্র। এভাবেই ভবিষ্যতে আমাদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।”
অনুষ্ঠানটি শেষ হয় বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে। ছোট শিশুদের দলগুলি অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে তাজা চারাগুলিকে সযত্নে লালন করছিল। সেই সময় তাদের হাসিতেই যেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল ভবিষ্যতের রোদ্দুর। সেই রোদ্দুরকেই আগামী দিনে আরও উজ্জ্বল করতে প্রস্তুত শালিমার।