গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জেলবন্দি ছেলের কাছে পেঁপের ভিতরে গাঁজা পুরে পাচার করতে গিয়ে পাকড়াও হলেন মা। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে।
ওই সংশোধাগার সূত্রে খবর, বুধবার ছিল বিচারাধীন বন্দিদের সঙ্গে আত্মীয়দের দেখা করার দিন। নিয়ম অনুযায়ী এই দিনগুলোতে পরিবারের লোকজন জেলবন্দি অভিযুক্তকে ফল, মুড়ি, বিস্কুটের মতো খাবার দিতে পারেন। জেলকর্মীরা সেই খাবার পরীক্ষা করে পৌঁছে দেন সংশ্লিষ্ট বিচারাধীন বন্দির কাছে।
গত কাল ছেলে মহম্মদ বাবুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তপসিয়ার বাসিন্দা সাঈদা বেগম। বছর পঞ্চাশের সাঈদা ছেলের সঙ্গে দেখা করার পর জেলকর্মীদের বলেন যে, তিনি ছেলের জন্য কিছু খাবার নিয়ে এসেছেন। সংশোধানাগার সূত্রে খবর, বিভিন্ন খাবারের মধ্যে সাঈদার কাছেছিল তিনটে বেশ বড় বড় পাকা পেঁপে।
খবরের কাগজে মোড়া পেঁপে দেখে প্রথমে জেলকর্মীদের কোনও সন্দেহ হয়নি। কিন্তু নাড়াচাড়া করতে গিয়ে জেলকর্মীদের মনে হয় পেঁপের মধ্যে কিছু নড়ছে। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন, পাকা পেঁপের বীজের আওয়াজ। কিন্তু তার পরেও এক জেলকর্মীর সন্দেহ হয়। তিনি স্ক্যানারে পরীক্ষা করেন। সেখানে দেখা যায় পেঁপের ভিতরে কিছুএকটা জমাট বস্তু রয়েছে।
এর পরেই একটি পেঁপে মাঝখান থেকে কাটা হয়। দেখা যায় পেঁপের পেটে পলিথিনে মুড়ে রাখা রয়েছে গাঁজা। সবক’টি পেঁপের পেটেই একই ভাবে ভরা রয়েছে গাঁজার প্যাকেট। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার হয় তিনটি পেঁপের ভিতর থেকে। জেল সূত্রে খবর, জেলে বসেই অন্যান্য বন্দিদের কাছে মোটা টাকায় গাঁজা বেচত মহম্মদ বাবু। আর সেই কারণেই গাঁজা আনিয়েছিল মাকে দিয়ে।
আরও পড়ুন- বৈঠকে যাব না, ক্ষমতা থাকলে সরকার ভেঙে দেখাক: মমতা
সঙ্গে সঙ্গে আটক করা হয় সাঈদাকে। খবর দেওয়া হয় হেস্টিংস থানার পুলিশকে। জেল সুপার সুপ্রকাশ রায়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় সাঈদাকে। জানা গিয়েছে, পেঁপের পেট চিরে ওই বীজ বার করে গাঁজার প্যাকেট ঢুকিয়ে ফের পেঁপের আঠা দিয়েই জুড়ে দেওয়া হয়েছিল ওই চেরা অংশ। খুব খুঁটিয়ে না দেখলে বোঝা সম্ভব নয় যে পেঁপের গায়ে কোনও অংশ চেরা হয়েছে। সংশোধানাগার সূত্রে খবর, ওই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর বাইরে থাকা আসা খাওয়ার এবং জামাকাপড় আরও সতর্ক হয়ে পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।কারণ,ওই পথেই মোবাইল থেকে সিম বা নেশার জিনিস জেলে ঢুকছে বলে মনে করছেন কারা দফতরের আধিকারিকরা।