একবালপুরের এই বহুতলেই থেঁতলে খুন করা হয় এক মহিলাকে— নিজস্ব চিত্র।
ঘরে ঢুকে মা ও দুই মেয়েকে কুপিয়ে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পন করল আততায়ী। প্রথমে শিলনোড়া দিয়ে তিনজনকে গুরুতর আঘাত করা হয়। তার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপায় অভিযুক্ত সুলতান আনসারি নামের বছর ২৫-এর যুবক। ঘটনাস্থলেই মা আকিদা খাতুনের (৪৫) মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি তাঁর দুই মেয়ে শাগুফতা (২০) এবং তইবা খাতুন (১৭)। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে একবালপুরের সুধীর বসু রোডে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর অভিযুক্ত সুলতান থানায় গিয়ে বলে, সে তার পরিচিত তিনজনকে খুন করেছে। এ কথা শুনেই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন একবালপুর থানার পুলিশকর্মীরা। তাঁরা দেখেন, ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন তিনজন মহিলা। দ্রুত তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তার আগেই মৃত্যু হয় আকিদার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পারিবারিক অশান্তির কারণে ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। সুলতান সম্পর্কে আকিদার দেওর হয়। সে আকিদার এক মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে নারাজ ছিলেন আকিদা ও তাঁর স্বামী হারুণ রশিদ। তা নিয়েই বিবাদের সূত্রপাত। প্রাথমিক তদন্তে সম্পর্কের টানাপোড়েনের বিষয়টি উঠে এলেও, ঘটনার নেপথ্য অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখচ্ছে পুলিশ।
যে বহুতলে ঘটনাটি ঘটেছে তারই বাসিন্দা শাকিল আহমেদ জানাচ্ছেন, “যখন ঘটনাটি ঘটেছে, তখন নমাজের সময়। তাই আবাসনে অনেকেই ছিলেন না। ছিলেন না আকিদার স্বামীও। পরিকল্পনা করেই ওই সময় ফ্ল্যাটে ঢোকে রাজাবাগানের বাসিন্দা ওই যুবক।”
শাকিলের কথায়, “আচমকা পুলিশ ঢুকতেই ভিড় জমে যায় এলাকায়। পুলিশের সঙ্গে বাড়ির ভিতরে ঢুকে দেখি, রক্তাক্ত অবস্থায় তিন জন ফ্ল্যাটের বিছানা এবং মেঝেতে পড়ে রয়েছেন। শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতবিক্ষত।’’
আরও পড়ুন: রেশন কার্ডের সঙ্গে এ মাসেই জুড়তে হবে আধার নম্বর, কী ভাবে?
স্থানীয় আর এক বাসিন্দা জানান, ১৯৯৫ সাল থেকে ওই বহুতলের চারতলায় ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া হারুণ রশিদ এবং তাঁর পরিবার। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে দুই মেয়ে বাবা-মার সঙ্গে থাকতেন। কারও সঙ্গে বেশি কথা বলত না ওই পরিবার। হামলাকারী সুলতান সম্পর্কে হারুণের তুতো ভাই।
আরও পড়ুন: গিলগিট-বালটিস্তানে ভোটের পাক সিদ্ধান্ত, প্রতিবাদে ভারত
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। তিনি বলেন, “হামলাকারী নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কয়েক বছর আগে ওই এলাকাতে এমনই একটি ভয়ঙ্কর খুনের ঘটনা ঘটেছিল।”