শহরে আসবে এমনই আরও ইলেকট্রিক বাস। নিজস্ব চিত্র
চলতি বছরের শেষে শহরের পথে নামতে চলেছে আরও ৫০টি ইলেকট্রিক বাস। কলকাতার রাস্তায় এখন মোট ৮০টি ইলেকট্রিক বাস চলছে। নতুন বাতানুকূল বাসগুলি এসে গেলে সেই সংখ্যাটা পৌঁছবে ১৩০-এ। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, নিউ টাউন, শাপুরজি এবং বলাকা ডিপো থেকে ওই সব বাস ছাড়বে। কলকাতার বিভিন্ন রুটে সেগুলি চালানো হবে। এর আগে কলকাতায় ইলেকট্রিক বাস চালানোর জন্য বিভিন্ন সরকারি বাস ডিপোয় চার্জিং স্টেশন তৈরি করেছিল রাজ্য পরিবহণ নিগম। তবে এ বার ওই বাস চালানো কিংবা সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিজেদের ঘাড়ে রাখছে না পরিবহণ নিগম। রাজ্য সরকার একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে বাসগুলি কিনছে। ওই সংস্থাই চালক সরবরাহ করবে। নির্দিষ্ট তিনটি ডিপোয় বাসের রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার পরিকাঠামোও তারাই গড়ে তুলবে। ওই সংস্থা চালক সরবরাহ করলেও যাত্রীদের থেকে ভাড়া আদায় করবেন পরিবহণ নিগমের কন্ডাক্টরেরাই।
নিগম সূত্রে খবর, প্রতিটি বাসকে মাসে অন্তত পাঁচ হাজার কিলোমিটার ও বছরে ৬০ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। ভাড়া স্থির করবে রাজ্য। টানা ১০ বছর বেসরকারি সংস্থাটিকে নিয়ম মেনে বাস চালাতে হবে। বাতানুকূল যন্ত্র খারাপ হলে, যাত্রী-পরিষেবা সম্পর্কিত যন্ত্রাংশ খারাপ থাকলে কিংবা যাত্রীদের সুরক্ষা বিঘ্নিত হতে পারে এমন কিছু ঘটলে, ওই সংস্থাকে জরিমানা দিতে হবে বা শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
বাসগুলি রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে কেনা হলেও তাতে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি থাকছে বলে খবর। নির্বাচিত তিনটি বাস ডিপোয় দূষণ কমানোর পাশাপাশি খরচ বাঁচাতে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল বসানো হচ্ছে। মাস কয়েক আগে কলকাতায় ইলেকট্রিক বাস চালানোর বিষয়টি ‘ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি’র নিজস্ব প্রকাশনায় উল্লিখিত হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিষেবার মানের সঙ্গে যাতে আপস করতে না হয়, তার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াতেই জরিমানার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।’’
দিল্লি মেট্রোর একটি লাইনে সম্প্রতি যে বেসরকারি সংস্থার থেকে ট্রেন কেনা হয়েছে, সেই সংস্থার হাতেই রক্ষণাবেক্ষণের ভার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিদেশে মেট্রো পরিষেবার ক্ষেত্রে এই মডেল যথেষ্ট প্রচলিত। কলকাতায় ইলেকট্রিক বাসের ক্ষেত্রে এ বার সেই পদ্ধতিই অনুসরণ করা হচ্ছে।
নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রযুক্তিগত ভাবে ডিজ়েল-চালিত বাসের থেকে ওই বাস আলাদা। কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে পৃথক পরিকাঠামো তৈরি করতে গেলে অনেক সময় লাগত। ঝক্কিও ছিল। এ ক্ষেত্রে সেই সমস্যা থাকবে না। শুরুতে বাস কেনার বিপুল খরচ বাদ দিলে ইলেকট্রিক বাস চালানোর খরচ অনেকটাই কম এবং তা পরিবেশবান্ধবও।