Online Payment

অর্ডার বাতিলে অ্যাপেই আটকে বহু গ্রাহকের টাকা

লকডাউনের পরে যার একটিও গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়নি। গোটা দেশে এমন বাতিল অর্ডারের সংখ্যা কোটির কাছাকাছি।

Advertisement

নীলোৎপল বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০ ০৩:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

লকডাউনের জেরে আটকে গিয়েছে অনলাইনে কেনাকাটা। আটকে গিয়েছে গ্রাহকের কাছে জিনিস পৌঁছে দেওয়ার কাজও। ফলে অনলাইনে ই-কমার্স সংস্থাগুলির নিজস্ব ‘ওয়ালেটে’ই আটকে গিয়েছে লক্ষাধিক গ্রাহকের টাকা।

Advertisement

অনলাইনে খাবার বা নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী আনানোর সংস্থাগুলি জানাচ্ছে, গত মঙ্গলবার দেশজোড়া লকডাউন ঘোষণার পরে শুধু কলকাতা শহর এবং শহরতলি থেকেই আটকে থাকা অর্ডারের সংখ্যা এখন প্রায় ১৫ লক্ষ। লকডাউনের পরে যার একটিও গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়নি। গোটা দেশে এমন বাতিল অর্ডারের সংখ্যা কোটির কাছাকাছি। তবে অর্ডার বাতিলের সঙ্গে সঙ্গেই টাকা আটকে যাওয়ার সমস্যাতেও পড়ছেন গ্রাহকেরা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে অনলাইনে অর্ডারের টাকা অগ্রিম দিয়ে দিয়েছিলেন অনেকে। এখন সেই টাকা আর হাতে পাচ্ছেন না তাঁরা। তা আটকে রয়েছে সংস্থার নিজস্ব ‘ওয়ালেটে’।

বুধবার ই-কমার্স সংস্থাগুলির বরাত পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার বিধিনিষেধ কিছুটা কমানোর পরে দ্রুত অর্ডার পৌঁছে দেওয়া হবে বলে দাবি করেছে ওই সংস্থাগুলি। তবে কলকাতায় এখনও সব ক’টি সংস্থা সম্পূর্ণ ভাবে কাজ শুরু করতে পারেনি। ফলে কত দিনে ওই অ্যাপের ওয়ালেটে আটকে থাকা টাকা গ্রাহকেরা ব্যবহার করতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

Advertisement

পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে এই আশঙ্কায় রবিবার, জনতা কার্ফুর দিনই অনলাইন সংস্থা বিগ বাস্কেটে কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অর্ডার দিয়েছিলেন ভবানীপুরের রূপম সরকার। কিন্তু সোমবার রাজ্য সরকার লকডাউনের ঘোষণা করে। অর্ডার বাতিল হয়ে যাওয়ার ফলে ওই সংস্থার ওয়ালেটে গিয়ে জমা হয় তাঁর প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার রূপম বলেন, “এই সময়ে এক টাকারও অনেক দাম। সেখানে এখন অকারণে টাকা আটকে রইল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ওই টাকা ফেরত পাব না। তা দিয়ে কিছু কিনতেও পারব না!” অরবিন্দ সরণির স্নেহা দত্ত আবার সোমবার রাতে অনলাইনে খাবার আনানোর সংস্থা জ়োম্যাটোয় অর্ডার করেন। সেই অ্যাপেও তাঁর দেওয়া ২৩০০ টাকা পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। ফ্লিপকার্টে বাড়ি সাফসুতরো রাখার কিছু সামগ্রী অর্ডার করেছিলেন নারকেলডাঙা মেন রোডের এক বাসিন্দা। দাবি, লকডাউনে অর্ডার বাতিলের জেরে আটকে গিয়েছে তাঁর ৪৮০০ টাকা।

রাজ্য সরকার বুধবার জানিয়েছে, এই সমস্যাগুলি বুঝে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছনোর অনলাইন সংস্থাগুলিকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রও ওই সমস্ত সংস্থার কর্মীদের জন্য পৃথক পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করার কথা বলেছে। তবে ফ্লিপকার্টের সিইও কল্যাণ কৃষ্ণমূর্তি এ দিন বলেন, “দ্রুত অর্ডার পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করছি আমরা। তবে প্রচুর অর্ডার জমে থাকায় একটু সময় লাগবে।” বিগ বাস্কেট কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, আমদাবাদ, বেঙ্গালুরু, ভোপাল, মুম্বই-সহ দেশের ১২টি শহরে এ দিন থেকেই কাজ চালু করে দিতে পারলেও কলকাতায় এখনই শুরু করতে পারছেন না। তবে দু’-এক দিনের মধ্যেই এখানে কাজ শুরুর ব্যাপারে আশাবাদী তাঁরা। সেই সঙ্গে সংস্থার পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক বলেন, “কাজ শুরু করতে পারলেও এত অর্ডার জমে রয়েছে যে, আগামী সাত দিন নতুন করে কোনও অর্ডার নিতে পারব না আমরা।” জ়োম্যাটোর সিইও দীপেন্দ্র গয়ালের আবার দাবি, অর্ডার বাতিল হলে প্রথমে ওয়ালেটে টাকা রাখা হয় ঠিকই। তবে কয়েক দিনের মধ্যেই তা গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে কত দিনে সেই টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে ফিরবে, তা নিয়েই সংশয়ে গ্রাহকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement