—প্রতীকী চিত্র।
গ্রাহকের ছবি ব্যবহার করে অন্য কেউ পেয়ে যাচ্ছেন সিম কার্ড। অথচ সেই গ্রাহক তা জানতেই পারছেন না। একটি-দু’টি নয়, এ ভাবে জালিয়াতি করে বিক্রি করা হয়েছিল প্রচুর সিম কার্ড। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে রবিবার রাতে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে লেক টাউন থানার পুলিশ। ধৃতের নাম যোগেন্দ্র ওঝা।
মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী এক সংস্থার তরফে পুলিশের কাছে সম্প্রতি একটি অভিযোগ জমা পড়ে। তাতে বলা হয়, জাল নথি এবং ওই সংস্থার অন্য গ্রাহকদের ছবি ব্যবহার করে সিম কার্ড বিলি করা হয়েছে এবং সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে সংস্থারই এক এজেন্ট। সেই সূত্রেই উঠে আসে অভিযুক্ত যোগেন্দ্রর নাম। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা জানতে পেরেছে, গ্রাহকদের তথ্য ব্যবহার করে জাল নথি তৈরি করা হয়েছে। সেই সব নথি ও গ্রাহকদের ছবির সাহায্যে অবৈধ ভাবে বিক্রি করা হয়েছে একের পর এক সিম কার্ড। এখনও পর্যন্ত এ রকম ৬২টি সিম কার্ডের হদিস মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলেই অনুমান তদন্তকারীদের।
ধৃত যোগেন্দ্রকে সোমবার বিধাননগর আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, এমন ঘটনা ঘটানো কোনও এক জনের পক্ষে সম্ভব নয়। এই ঘটনায় আরও কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
গ্রাহকদের অনেকেরই আশঙ্কা, তাঁদের অজান্তেই তাঁদের নামে বিক্রি হয়ে যাওয়া কোনও সিম কার্ড যদি অপরাধীদের হাতে চলে যায়, তা হলে পরে তাঁরা বিপদে পড়তে পারেন। তাই আরও কড়া নজরদারির প্রয়োজন। শুধু তা-ই নয়, নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রাহকদের তথ্য যাতে বাইরের কেউ জানতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা করাও প্রয়োজন।
পুলিশ সূত্রের খবর, যে সব সিম কার্ড ওই ভাবে জালিয়াতি করে বিক্রি করা হয়েছিল, সেগুলি চিহ্নিত করে সংযোগ বন্ধ করা হয়েছে। সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া সত্ত্বেও তা নিয়ে কেউ অভিযোগ জানাননি। পুলিশ জানিয়েছে, ওই সব সিম কার্ডের কোনওটি অপরাধমূলক কাজকর্মে ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘এই ধরনের ঘটনা আকছারই ঘটছে। মোবাইলের সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে নথি যাচাইয়ে বিশেষ জোর দেওয়া প্রয়োজন। বিশেষত, প্রিপেড সংযোগের ক্ষেত্রে।’’