পুরসভা-সংসদ টানাপড়েনে অব্যবস্থা স্কুলে

পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই স্কুলে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে পুরসভার স্কুল। এর পরে শুরু হয় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের স্কুল। দু’টিতেই প্রাক্ প্রাথমিক স্তর থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৫
Share:

ফাইল চিত্র।

একই বাড়িতে দু’টি স্কুল। একটি কলকাতা পুরসভার, অন্যটি কলকাতা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের। অথচ দিনের পর দিন স্কুলের মধ্যে যত্রতত্র পড়ে থাকে আবর্জনা। পাশাপাশি বাচ্চাদের খেলার মাঠে গাড়ি পার্কিং করা হয় বলেও অভিযোগ। শিক্ষার অধিকার আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এ ভাবেই চলছিল বাইপাসের ধারে পঞ্চান্নগ্রামের বি আর অম্বেডকর প্রাথমিক বিদ্যালয়। অবশেষে নড়েচড়ে বসল দু’পক্ষই। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে কলকাতা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ এবং কলকাতা পুরসভা।

Advertisement

পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই স্কুলে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে পুরসভার স্কুল। এর পরে শুরু হয় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের স্কুল। দু’টিতেই প্রাক্ প্রাথমিক স্তর থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, স্কুল ভবনের দরজা থাকলেও প্রধান ফটক নেই। তাই যার যখন ইচ্ছে স্কুলের ভিতরে গাড়ি পার্কিং করে। শিক্ষার অধিকার আইন (২০০৯) অনুযায়ী স্কুলে পাঁচিল থাকা বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া এলাকা পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত রাখারও কথা। কিন্তু এই স্কুলের ক্ষেত্রে প্রতি পদে সেই নিয়ম ভাঙা হচ্ছে বলে খেদ প্রকাশ করেছে খোদ দফতরই।

Advertisement

জেলা শিক্ষা সংসদ সূত্রের দাবি, সকালে পুরসভার স্কুল চলার সময়ে এলাকা নোংরা করা হয়। চার দিকে জল জমে থাকে। মাঠ জুড়ে থাকে পরপর থাকে গাড়ি। সংসদের অধীনে থাকা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুলেখা জানা বলেন, ‘‘পুরসভার স্কুল চলার সময়ে নোংরা করা হয়। সিঁড়ির উপরে খাবার ফেলে রাখা হয়। আমরা নিয়মিত পরিষ্কার করি। দিনের পর দিন এ ভাবেই চলছে। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। লাভ হয়নি।’’ যদিও পুলিশের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।

এই অভিযোগের সরাসরি কোনও জবাব দেননি পুরসভার অধীনে থাকা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অপর্ণা ঠাকুর। তিনি বলেন, ‘‘কারও অভিযোগ থাকলে উচিত সেটা আমাকে জানানো। আমায় কেউ কিছু জানায়নি। এ বিষয়ে যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলবেন।’’

প্রশ্ন উঠেছে স্কুল চত্বর কেন পরিষ্কার করা হয় না? শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, দু’বছর আগে সর্বশিক্ষা মিশনের তরফে কলকাতার প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে প্রায় দু’হাজার স্কুলের উপরে সমীক্ষা করা হয়েছিল। সেখানে বেশ কিছু অব্যবস্থা ধরা পড়ে। এতে বিড়ম্বনায় পড়ে দফায় দফায় স্কুলগুলি পরিষ্কারের জন্য টাকা বরাদ্দ করে দফতর। সেই তালিকায় এই স্কুলটিও ছিল।

কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, পুরসভা ও শিক্ষা সংসদের এই দ্বৈরথে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। শিক্ষাভবন সূত্রের খবর, সমস্যা মেটাতে সম্প্রতি দুই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা, স্কুল পরিদর্শককে (এসআই) আলোচনায় ডেকেছিল সংসদ। কিন্তু সেখানে অপর্ণাদেবী যোগ দেননি। যদিও এ দিন তিনি দাবি করেন, ‘‘আমাকে কেউ কোনও আলোচনায় ডাকেনি।’’

তবে কলকাতার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না বলেন, ‘‘সমস্যা মিটে যাবে। দ্রুত পুরসভার সঙ্গে কথা বলা হবে।’’ কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কার্তিকবাবু বিষয়টি জানিয়েছেন। ওঁকে বলেছি সমস্যাগুলিআমাকে জানাতে। পুরসভার তরফ থেকে স্কুল পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement