ট্রাক ছিনতাই, সঙ্গে গায়েব ১৭ লক্ষের ওষুধও

ওই ট্রাকে ছিল প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার আয়ুর্বেদিক ওষুধ। আচমকাই দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়ে খালাসিকে মারধর করে ট্রাক নিয়ে পালায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

জাতীয় সড়কে ট্রাক বা লরি ছিনতাই নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু সোমবার লিলুয়া থানা এলাকার ছ’নম্বর জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় জখম এক ট্রাক ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে নড়ে বসেছে পুলিশ। তদন্তে নেমে হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা জেনেছেন, ডোমজুড়ের কোরোলা থেকে ১৭ লক্ষ টাকার আয়ুর্বেদিক ওষুধ সমেত একটি ট্রাক ছিনতাই করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যাবতীয় ওষুধ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দিয়েছিল ছিনতাইবাজেরা! তদন্তকারীদের ধারণা, এই ঘটনার পিছনে রয়েছে একটি বড় চক্র। তা না-হলে এত দ্রুত চুরির মাল পাচার করা সম্ভব হত না। ওই চক্রের সন্ধানে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, গত ৮ ডিসেম্বর রাতে ডোমজুড়ের নিউ কোরোলায় পার্কিংয়ে ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাস্তার ধারের ধাবায় খেতে গিয়েছিলেন চালক। খালাসি ছিলেন গাড়িতেই। ওই ট্রাকে ছিল প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার আয়ুর্বেদিক ওষুধ। আচমকাই দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়ে খালাসিকে মারধর করে ট্রাক নিয়ে পালায়। হাওড়ার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার অনুপম সিংহ মঙ্গলবার বলেন, ‘‘সোমবার সকালে লিলুয়া থানা এলাকার ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি দুর্ঘটনার খবর আসে। গুরুতর আহত অবস্থায় দু’জনকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় এক জনের।’’

অনুপমবাবু জানান, জখম এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওই ব্যক্তি স্বীকার করে, তারাই ওষুধ ভর্তি ট্রাকটি ছিনতাই করেছিল। চোরাই ওষুধ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় নামিয়ে ফেরার পথে ট্রাকটি এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল তারা। তখনই একটি গাড়ি পিছন থেকে তাদের ধাক্কা মারে। সোমবার ভোরে পুলিশ দু’জনকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, গত ৮ তারিখ বাসুদেব সিংহ নামে এক ব্যবসায়ী ডোমজুড়ের কোরোলা থেকে আয়ুর্বেদিক ওষুধ সমেত ট্রাক চুরির অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি পুলিশকে জানান, বহু লক্ষ টাকার ওষুধ-সহ একটি মোটরবাইকও ছিল সেই ট্রাকে। কোরোলার কাছে ট্রাকটি দাঁড় করিয়ে চালক খেতে গিয়েছিলেন। খালাসি গাড়িতেই ছিলেন। তখন দুষ্কৃতীরা এসে খালাসিকে মারধর করে ট্রাক ছিনতাই করে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চিকিৎসাধীন অভিযুক্তের বয়ান থেকে জানা যায়, তারা সমস্ত ওষুধ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দিয়েছে। সেই বয়ানের উপরে ভিত্তি করে ডোমজুড় থানা এবং কলকাতার গোয়েন্দা দফতরের সাহায্যে অভিযানে নামে হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। উদ্ধার হয় চুরি হওয়া বেশির ভাগ ওষুধ। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জানান, ওষুধ চুরির অভিযোগে এক ‘রিসিভারকেও’ গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে কারও নাম জানাতে চায়নি পুলিশ। তাদের অনুমান, হাইওয়েতে ট্রাক চুরির একটি বড় চক্র ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সেই চক্রকে ধরার জন্য ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। চুরি যাওয়া বাকি ওষুধ উদ্ধারেরও চেষ্টা চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement