প্রতীকী ছবি।
এলাকায় অবৈধ নির্মাণের বিরোধিতা করায় রবিবার রাতে মহেশতলা থানা এলাকার একটি ক্লাবের সদস্যদের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল। এই ঘটনায় ওই ক্লাবের প্রায় ১৫ জন সদস্য গুরুতর ভাবে জখম হয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। রাতেই তাঁদের বেহালার বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহেশতলা পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের রায়পুরে অবৈধ ভাবে জমি দখল করে নির্মাণকাজ শুরু করেছিল এলাকারই একটি দুষ্কৃতী দল। অভিযোগ, স্থানীয় ক্লাবের পরিচালন কমিটিতে নিজেদের আধিপত্য কায়েম রেখেই ওই অবৈধ নির্মাণকাজ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল তারা।
এরই মধ্যে রবিবার রাতে ওই ক্লাবের সদস্যেরা পরিচালন কমিটির একটি বৈঠক ডাকেন। সেই বৈঠকে নতুন পরিচালন কমিটি তৈরির কথা ঘোষণা করা হয়। জানানো হয়, নতুন কমিটিতে এলাকার মহিলাদের বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
কমিটিতে কোন ব্যক্তি কোন পদে থাকবেন, সে ব্যাপারেও ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার পরে সর্বসম্মতিক্রমে নতুন কমিটির সদস্যদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ বারের কমিটিতে যে মহিলা সদস্যেরা প্রাধান্য পাবেন, সেটাও সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ছিল।
অভিযোগ, নতুন পরিচালন কমিটির সদস্যদের নামের তালিকা ঘোষণা হতেই শেখ বাপ্পা নামে অবৈধ নির্মাণের মূল পান্ডা এবং তার অনুগামী প্রায় শ’দেড়েক দুষ্কৃতী ক্লাবে হাজির হয়। তার পরে ক্লাবঘরের চেয়ার তুলে নিয়ে তা দিয়েই সদস্যদের এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে তারা। ক্লাবের সদস্যেরা প্রতিবাদ করায় মারধরের মাত্রা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে আসবাবপত্রও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীরা চলে গেলে রাতেই মহেশতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় ক্লাবের তরফে।
ক্লাবের সম্পাদক শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘খড়েরবাগান নামে স্থানীয় একটি এলাকায় কিছু মানুষ বসবাস করতেন। শেখ বাপ্পা ও তার শাগরেদরা তাঁদের গায়ের জোরে তুলে দিয়ে সেখানে অবৈধ ভাবে প্রোমোটিং শুরু করে। সেই ঘটনারই প্রতিবাদ করেছিলাম আমরা, ক্লাবের সদস্যেরা। অবৈধ নির্মাণ রুখে দেওয়ার পাশাপাশি ক্লাবের পরিচালন কমিটিতে মহিলাদের প্রাধান্য দেওয়ায় শেখ বাপ্পা ও তার দলবল রাতে ক্লাবে হামলা চালিয়েছে। আমাদের ক্লাবটি দখলে রেখে বেআইনি প্রোমোটিংয়ের কারবার চালাতে চেয়েছিল শেখ বাপ্পা। সেই উদ্দেশ্যেই পরিচালন কমিটিতে নিজের লোক ঢোকানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ক্লাবের বৈঠকে মহিলা সদস্যদের প্রাধান্য দেওয়ায় ওর পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তাই হামলা চালিয়েছে।’’
ঘটনার পর থেকে শেখ বাপ্পা ও তার অনুগামীরা পলাতক বলেই জানিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে মহেশতলা থানা সূত্রে জানা গিয়েছে।