মাকে খুনে অভিযুক্ত কুঁদঘাটের বাবুপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাকেশ দত্ত। —নিজস্ব চিত্র।
ছেলের মারে মৃত্যু হল মায়ের। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার কুঁদঘাটে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে কুঁদঘাটের বাবুপাড়া এলাকার বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন, এক মহিলার মৃত্যুর বিষয়ে। পুলিশের কাছে তাঁরা অভিযোগ করেন যে, ওই প্রৌঢ়ার ছেলে তাঁকে সকালে মারধর করেন। তার পরেই মৃত্যু হয় ওই মহিলার।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে ১১টা নাগাদ প্রতিবেশীরা জানতে পারেন বছর পঞ্চাশের নমিতা দত্তের মৃত্যু হয়েছে। নমিতার ছেলে রাকেশ দাবি করেন যে, হঠাৎ করেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর মায়ের। কিন্তু বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয় প্রতিবেশীদের। কারণ, সকালে তাঁরা অনেকেই রাকেশের সঙ্গে তাঁর মায়ের বচসার আওয়াজ পেয়েছিলেন। এ দিন এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘এর আগেও বিভিন্ন সময়ে রাকেশ তাঁর মাকে মারধর করেছে। তাই আমাদের সন্দেহ হয়, নমিতার মৃত্যুতে ছেলের ভূমিকা আছে।” সেই অনুযায়ী পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমিতাকে নিজের ঘরের বিছানাতেই মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, পারিবারিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে মা-ছেলের মধ্যে বিবাদ চলছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতিবেশীদের দাবি, টাকাপয়সা এবং সম্পত্তি নিয়ে মায়ের সঙ্গে বিবাদের জেরে আগেও মাকে মারধর করেছে ছেলে। সেই গন্ডগোল প্রতিবেশীরাই বিভিন্ন সময়ে মিটিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পথে পুলিশ, গ্রেফতার মত্ত স্কুলগাড়ি চালক
পুলিশ জানতে পেরেছে এ দিন সকালেও সে রকমই কোনও বিষয় নিয়ে বচসার মধ্যেই রাকেশ মাকে চড়-ঘুসি মারতে থাকে। তার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন নমিতা। খানিক ক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর। প্রতিবেশীরাই রাকেশকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকের জন্য পথে বেশি বাস
ময়নাতদন্তের জন্য নমিতা দত্তের দেহ নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা তদন্ত শুরু করেছেন। নমিতার দেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। এক শীর্ষ পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘আমরা প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করছি রাকেশের বিরুদ্ধে।”
পেশায় টালিগঞ্জের স্টুডিয়ো পাড়ায় টেকনিশিয়ান রাকেশ। তদন্তকারীরা রাকেশকে জেরা করে জানার চেষ্টা করছেন, গোটা ঘটনায় আরও কোনও রহস্য আছে কি না।