—ফাইল চিত্র।
পুজো-পরীক্ষায় ভাল ভাবেই পাশ করল মেট্রো।
গত কয়েক মাস ধরে যা অবস্থা হয়েছিল, তাতে যাত্রীদের মধ্যে যথেষ্ট আশঙ্কা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুজোর ভিড় ভাল ভাবেই সামাল দিয়েছে মেট্রো। উল্টে ভিড়ের যাবতীয় রের্কড ভেঙে এ বছর চতুর্থীতে ৮ লক্ষেরও বেশি যাত্রী বহন করল মেট্রো।
গত কয়েক মাসে কী কী ঘটেছে মেট্রোতে? সুড়ঙ্গে আটকে পড়া থেকে শুরু করে কামরায় আগুন, দরজা আটকে যাওয়া, বাতানুকূল যন্ত্র কাজ না করা, মাঝেমধ্যেই সময়ে ট্রেন না আসা, প্ল্যাটর্ফমে ঘোষণার মাইক বন্ধ করে রাখা সবই ঘটে যাচ্ছিল মেট্রোয়। এমনকী যান্ত্রিক ত্রুটিতে ট্রেন বন্ধ হলেই প্ল্যাটফর্মের ইলেক্ট্রনিক ঘড়ি বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনাও দেখেছেন যাত্রীরা। আর তাতেই তৈরি হয়েছিল আশঙ্কা।
যাত্রীদের তো বটেই প্রশ্ন উঠেছিল মেট্রোর কর্তা-কর্মীদের একাংশের মধ্যেও যে দীর্ঘ দিনের পুরনো রেক দিয়ে কী ভাবে আবার এ বছর আবার ওই বিপুল সংখ্যক ভিড় টানবে মেট্রো। কিন্তু প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা থেকে শুরু করে অনেকটাই সময় মেনে এ বার চলেছে মেট্রো। বাতানুকূল কামরাগুলি ভিড়ে ঠাসা হলেও এ বার আর ততটা গরম হয়নি। শুধু তাই নয়, দরজাও আটকেও অনেক্ষণ থেমে থাকার ঘটনা ঘটেনি।
কিন্তু পুজোর ক’টা দিন মেট্রোর ওই স্মার্ট চেহারা দেখে যাত্রীরা এ বার প্রশ্ন তুলেছেন, ওই ভাঙা রেক দিয়ে কী করে এমনটা সম্ভব হল? মেট্রো কর্তারা প্রকাশ্যে এর উত্তর না দিলেও অন্দরের খবর হল, ভিড়ের কথা ভেবে মেট্রোর উচ্চ পদস্থ কর্তারা এই ক’টা দিন সমস্ত কর্মীদের চারপাশ দিয়ে প্রচণ্ড শক্ত করে ‘দায়বদ্ধতার’ গেরো দিয়েছিলেন। তাতেই কাজ হয়েছে। ওই ফাঁস থেকে কেউ বেরিয়ে আসতে পারননি। পুজোর ওই ক’টা দিন এ বার কার্যত সব কর্তা-কর্মীই হাজির ছিলেন। মেট্রো সূত্রের খবর, ঘোষক থেকে চালক, আবার প্রশাসক থেকে সাধারণ কর্মী, এমনকি কারশেডের ইঞ্জিনিয়ার থেকে সুরক্ষাকর্মী, হাজির ছিলেন সবাই। ফলে মেট্রো ছুটেছে মেট্রোর মতো করে।
এ বছর কলকাতার বেশির ভাগ পুজো অনেক আগেই উদ্বোধন হয়ে যাওয়ায় চতুর্থী থেকেই ভিড়ের ঢল নেমে ছিল শহরে। চতুর্থীতে গত বছর মেট্রোয় যাত্রী হয়েছিল সাড়ে সাত লক্ষ। আর এ বছর যাত্রী হয়েছে ৮ লক্ষেরও বেশি। মেট্রোর হিসাবে, চতুর্থী থেকে অষ্টমী পর্যন্ত প্রতি দিনই গত বছরের তুলনায় এ বছর মেট্রো ভিড়
টেনেছে বেশি। নবমী থেকে দশমীতেও ভিড় হয়েছে সাধারণ দিনের চেয়ে অনেকটাই বেশি।
কিন্তু ভালয় ভালয় পুজো কেটে গেলেও আগামী সপ্তাহ থেকেই আবার অফিস, স্কুল-কলেজ খুলছে। নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, পুজোর ক’টা দিন তো ছিল ‘মান্থলি টেস্ট’। এ বার তো বাকি বছরটা ঠিকঠাক ট্রেন চালিয়ে ‘অ্যানুয়াল পরীক্ষা’ পাশ করতে হবে মেট্রোকে। তবেই বোঝা যাবে কেমন তৈরি হল মেট্রো!