ঢেউ খেলানো চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ। ছবি: সুমন বল্লভ
এ শহরের ব্যস্ততম রাস্তাগুলির অন্যতম চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ। ওই রাস্তার বেশ কিছু অংশ উঁচুনিচু হওয়ায় বৃষ্টি হলেই জল জমে সেখানে। গাড়ি চলার সময়ে ঝাঁকুনিও লাগে। তাতে রাস্তার খানাখন্দ আরও বাড়ে।
এই কারণে মাঝেমধ্যেই রাস্তাটি মেরামত করতে হয় পুরসভাকে। সে কথা মাথায় রেখেই ওই রাস্তার পাশ দিয়ে কংক্রিটের একটি ‘ইউটিলিটি করিডর’ তৈরি করতে চেয়েছিল পুরসভা। যার অর্থ, গোটা রাস্তাটির একটি অংশকে বেশি মজবুত করতে কংক্রিটে বাঁধিয়ে দেওয়া হত। কিন্তু ওই রাস্তার নীচ দিয়েই গিয়েছে মেট্রো রেলের লাইন। তাই এ বিষয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষেরও মতামত চেয়েছিল পুরসভা। সম্প্রতি মেট্রোর তরফে পুরসভাকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, মেট্রোপথের উপরে কংক্রিটের করিডর করা ঠিক হবে না। তাতে মেট্রোর ক্ষতি হতে পারে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ তৈরির কাজের জেরে বৌবাজার এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনায় এমনিতেই অস্বস্তিতে রয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তাই তাঁদের আপত্তিতে করিডর তৈরির ভাবনা আপাতত শিকেয় তুলে রাখতে চায় পুরসভা। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বুধবার জানান, মেট্রোর পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়েছে। তাই কংক্রিটের করিডর করা হচ্ছে না।
ধর্মতলা মোড় থেকে শুরু হয়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ চলে গিয়েছে শ্যামবাজার পর্যন্ত। যে হারে যানবাহনের চাপ বাড়ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে ওই রাস্তায় যানজট আরও তীব্র হতে পারে বলেই মনে করছেন পুর আধিকারিকেরা। এত ব্যস্ত একটি রাস্তা মাঝেমধ্যে মেরামত করতে গেলে পুরোটাই বন্ধ রাখতে হয়। সে কথা জানিয়েই কলকাতার পুর কমিশনার খলিল আহমেদ মাস পাঁচেক আগে কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের জেনারেল ম্যানেজারকে চিঠি লিখেছিলেন। তাতে বলা হয়েছিল, ওই রাস্তার নীচ দিয়েই গিয়েছে নিকাশি নালা, পানীয় জলের লাইন এবং বিএসএনএল ও সিইএসসি-র হাইটেনশন কেব্ল। সে সবের রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতির জন্যও রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করতে হয়। তাতে রাস্তার হাল খারাপ তো হয়ই, যান চলাচলও বিঘ্নিত হয়। বেশি দিন রাস্তা আটকে রাখা যায় না বলে মেরামতির কাজও ভাল করে হয় না। সেই কারণেই ওই রাস্তার উপরে কংক্রিটের একটি ইউটিলিটি করিডর গড়ার পরিকল্পনা করেছিল পুর প্রশাসন। চিঠিতে বলা হয়, করিডর তৈরি হয়ে গেলে ওই রাস্তার মেরামতির সময়ে কংক্রিটের করিডর দিয়ে যান চলাচল করতে পারবে।
সম্প্রতি মেট্রো রেলের প্রিন্সিপাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার কমল বাইথা পুর কমিশনারকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, কংক্রিটের রাস্তা হলে মেট্রোর সুড়ঙ্গের উপরে চাপ বাড়বে। ওই সুড়ঙ্গ সেই ভার নেওয়ার উপযুক্ত নয়। তাই সেখানে কংক্রিটের রাস্তা করা ঠিক হবে না।