পলতায় জল পরিশোধনাগারের একটি ইউনিটের সূচনা করলেন মেয়র। নিজস্ব চিত্র
পুর নির্বাচনের আগে মেয়র ফিরহাদ হাকিম ফের জল কর প্রসঙ্গ সামনে আনলেন। পলতায় একটি নতুন জলপ্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠানে গিয়ে ফিরহাদ জানিয়ে দিলেন, জল কর নেওয়া হোক, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান না। ফিরহাদের কথায়, ‘‘দিল্লি থেকে চাপ এলেও, আমরা জল করের বিরুদ্ধে। তবে গঙ্গার জল পরিশোধিত করতে গিয়ে বহু কোটি টাকা খরচ হয়। আমাদের জল অপচয়ের দিকে নজর দিতে হবে।”
বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুরের পলতায় ‘ইন্দিরা গাঁধী জল পরিশোধনাগার’-এর একটি ইউনিটের নতুন করে সূচনা করেন মেয়র। কলকাতা পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে, এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় নতুন করে ওই প্রকল্পটি চালু হল। তাতে আরও বেশি পরিমাণে জল সরবরাহ (প্রতি দিন ২০ মিলিয়ন গ্যালন) করা যাবে বলে দাবি করেন মেয়র। তিনি বলেন, “জলের সরবরাহ যদি ঠিক থাকে আগামী ২০ বছর কোনও কষ্ট হবে না। পলতা থেকে প্রতি দিন ২৬২ মিলিয়ন গ্যালন পরিশোধিত জল উৎপাদিত হয়। ব্যারাকপুর থেকে দমদম হয়ে কলকাতা পর্যন্ত জল পৌঁছে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রান্তে। আমরা গঙ্গা থেকে জল নিচ্ছি, আবার গঙ্গাকেই দূষিত করছি। এটা হতে পারে না। আমাদের গঙ্গাকে বাঁচাতে হবে।”
বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি জল কর প্রসঙ্গও তোলেন। তাঁর কথায়: “গঙ্গা বাঁচানোর কথা ভাবছি না। কত জল অপচয় হচ্ছে। আমার কেউ এ সব ভাবছি না। ভাড়াটে থেকে মালিক, পাড়ায় কল থেকে জল পড়ে যাচ্ছে। জল নষ্ট হচ্ছে। আমরা দেখছি, কিন্তু কেউ সচেতন হচ্ছি না।” এর পর তিনি জল বিভাগের ডিজি মৈনাক মুখোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলেন, “আমি মৈনাকবাবুকে জল অপচয়ের বিষয়টি নজরে রাখতে বলেছি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলের কর নিতে বারণ করেছিলেন। জল পরিশোধিত করতে প্রতি গ্যালন পিছু ৮ টাকা খরচ হয়। জলই হচ্ছে জীবন। জীবনের জন্য কর নেব না। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এর পরেও কর নেব না। ৫৭টি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন করেছি। যাতে ভাল ভাবে জল পেতে পারেন নাগরিকরা।”
আরও পড়ুন: ক্রমশ প্রস্থে কমছে গঙ্গা, কমছে জল নিরাপত্তাও?
অন্তর্ঘাতের বিষয় নিয়েও কর্মীদের সচেতন করেন। তিনি বলেন, “রাজনীতিতে অনেক নোংরা খেলা হচ্ছে। আপনারা সতর্ক থাকবেন। অপরিচিত ব্যক্তিকে ঢুকতে দেবেন না। কেউ জলে বিষ মিশিয়ে দিতে পারে। তা হলে অনর্থ ঘটে যাবে। আমরা একটা পরিবার। সবাই মিলে গঙ্গা বাঁচানো, জল অপয়চের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই।” এ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান-সহ প্রশাসনিক কর্তারা হাজির ছিলেন।