মেয়র ফিরহাদ হাকিম।—ফাইল চিত্র।
বেরিয়েছিলেন পুজোর আগে শহরের রাস্তার হাল দেখতে। কিন্তু মেয়রের চোখ আটকে গেল কড়েয়া এলাকার রাইফেল রেঞ্জ রোডে ফুটপাতের উপরে এক বেআইনি নির্মাণে।
সেখানে পুলিশ এবং প্রশাসনের চোখের সামনেই অবাধে সেই নির্মাণকাজ চলেছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের ডিজি-কে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিলেন মেয়র।
পুরসভার বাসে চড়ে বুধবার রাত ৯টায় পুর ভবন থেকে বেরোন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সঙ্গে ছিলেন রাস্তা দফতরের মেয়র পারিষদ রতন দে, কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) সন্তোষ পাণ্ডে, পুর কমিশনার খলিল আহমেদ-সহ পুরসভা, কেএমডিএ, পূর্ত, সেচ, পরিবহণ এবং বন্দরের পদস্থ কর্তারা। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে উত্তর, মধ্য, পূর্ব এবং দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখেন তাঁরা। শ্যামবাজারের কাছে বাস থেকে নেমে রাস্তার হাল দেখেন তাঁরা। সেখান থেকে উল্টোডাঙা যাওয়ার পথে ছোট গলিতে থাকা তেলেঙ্গাবাগান পুজো কমিটির মণ্ডপে ঢুকে পড়েন। পুলিশের কাছে ওই এলাকার ট্র্যাফিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান তাঁরা। শিয়ালদহের বিদ্যাপতি সেতুর দিকে যাওয়ার পথে বেলেঘাটায় একাধিক জায়গায় জঞ্জাল দেখে তা সাফ করার নির্দেশ দেন মেয়র। শিয়ালদহের ট্রামলাইনের পাশে ছয় ইঞ্চির গর্ত দেখে পরিবহণ ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের তা সারানোর ব্যবস্থা করতে বলেন তিনি। এর পরে পার্ক সার্কাস মোড়, সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ, ঝাউতলা লেন, গুরুসদয় দত্ত রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখেন। একাধিক জায়গায় নেমে দেখেন, কোথাও এবড়োখেবড়ো রাস্তা, কোথাও গর্ত, কোথাও বা বাতিস্তম্ভ কম থাকায় এলাকা অন্ধকার। মহালয়ার আগেই কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন তিনি।
তবে সব চেয়ে খারাপ হাল রুবি মোড়ের কাছে ই এম বাইপাসের। তা দেখে মেয়র ক্ষোভ প্রকাশ করেন আরভিএনএলের উপরে। তিনি বলেন, ‘‘আরভিএনএলের সিইও-কে ডেকে পাঠাব। ৩০ তারিখের আগেই ওই রাস্তা সারাতে হবে।’’ ওই রাস্তা কেএমডিএ-র হলেও বর্তমানে মেট্রোর কাজের জন্য সেটির হাল বেশ খারাপ। তাই মেট্রোরই রাস্তা সারানোর কথা।
কালিকাপুর মোড় থেকে যাদবপুরের দিকে যাওয়ার রাস্তায় পাঁচিল ঘেরা একটি জায়গায় জঞ্জাল জমে রয়েছে। তা থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। বাস থেকে নেমে তা দেখতে গিয়ে মেয়র জানতে পারেন, সেখানে পুরসভার কোনও ভ্যাট নেই। তাই এলাকার বাসিন্দারা সেখানেই ময়লা ফেলেন। মেয়র ওই পাঁচিল ভেঙে দিয়ে জায়গাটি রাস্তার সঙ্গে জুড়ে দিতে বলেন। রাতেই শুরু হয় সেই কাজ।
টালিগঞ্জের এনএসসি বসু রোডে একাধিক জায়গায় গর্ত দেখতে পান মেয়র। সেই সঙ্গেই দেখা যায়, পাইপলাইন লিক করে জল জমে রয়েছে ইন্দ্রপুরী স্টুডিওর কাছে। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন মেয়র। তিনি জানান, ওই রাস্তা ধরেই মুখ্যমন্ত্রী পুজোর উদ্বোধন করতে যাবেন মহালয়ার দিন। তার আগেই শেষ করতে হবে কাজ।