দে-ছুট: পথশিশুদের দৌড় প্রতিযোগিতা। রবিবার, গোলপার্কে। নিজস্ব চিত্র
সকাল ৬টার মধ্যে দৌড় শুরুর লাইনে হাজির হয়ে গিয়েছিল ওরা। চোখে-মুখে উত্তেজনা। সকলেরই বয়স ১০ থেকে ১৯-এর মধ্যে। রবিবার সকালে গোলপার্ক থেকে পদ্মপুকুর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার দৌড়ের প্রতিযোগিতায় এ ভাবেই অংশ নিল প্রায় ২০০ জন কিশোর-কিশোরী। ওরা কেউ বেহালা-বানতলা-আড়ুপোতার হোমের বাসিন্দা, কেউ আবার ঢাকুরিয়া, টালিগঞ্জ, পদ্মপুকুর এলাকার পথশিশু।
একসঙ্গে এমন দৌড়ে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা ওদের সকলের কাছেই নতুন। এই দৌড়ের অন্যতম আয়োজক, ফিটনেস কোচ চিন্ময় রায় জানাচ্ছেন, কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে খেলাধুলোর বিকল্প নেই। প্রাণশক্তিতে ভরপুর এই ছেলেমেয়েদের অনেকেই সুযোগের অভাবে ভুল পথে পা বাড়ায়। খেলাধুলোর সুযোগ সে ক্ষেত্রে তাদের নতুন দিশা দেখাতে পারে। এই ভাবনা থেকে আয়োজন করা হয়েছিল এ দিনের দৌড়ের। উৎসাহ দিতে দৌড়ে যোগ দিয়েছিলেন সাঁতারু, ক্রিকেটার এবং শারীরচর্চায় উৎসাহীরাও।
বয়স অনুযায়ী কিশোর-কিশোরীদের চার ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। প্রতিটি বিভাগ থেকে প্রথম চার জনকে বেছে নেওয়া হয় এ দিনের বিজয়ী হিসেবে। বানতলার বাসিন্দা বছর আঠারোর শ্রাবন্তী সর্দার, প্রিয়া মণ্ডল, কণিকা মণ্ডলদের মতো রাগবি খেলোয়াড়েরা দৌড়ে সহজেই বাজিমাত করে। বড়দের সঙ্গে সমানে পাল্লা দিয়েছে খুদেরাও।
এ দিন বিজয়ীদের মধ্যে থেকে আগ্রহীদের বিবেকানন্দ পার্কে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ভেবেছেন আয়োজকেরা। এই কাজে এগিয়ে এসেছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার রাজা বেঙ্কট। এ দিন খেলাধুলোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি, ওই অনুষ্ঠান থেকে সম্প্রীতি ও একতার বার্তাও দেওয়া হয়। পড়াশোনায় উৎসাহ দিতে অংশগ্রহণকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বই, খাতা ও পেন।