প্রতীকী ছবি।
করোনো অতিমারির সময়ে দীর্ঘকাল ধরে বন্ধ স্কুলগুলি পরিস্থিতির চাপে অনলাইন ক্লাস শুরু করেছিল। গোড়ার দিকের যাবতীয় সমস্যা যুঝে এখন নিয়মিত অনলাইন ক্লাসে পারদর্শী বেশির ভাগ স্কুল। সেই শিক্ষাই এ বারের পুজোর ছুটিতে সহায় হল আগামী বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের।
এ বছর একটানা গরমের ছুটির পরে ফের এক মাস পুজোর ছুটি পেয়েছে স্কুলগুলি। ফলে আগামী বছর যারা মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে বসবে, তাদের ক্লাস খুব কম হয়েছে। তবে এই সমস্যা বেশি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের। মূলত তাদের কথা চিন্তা করেই পুজোর ছুটির মধ্যে অনলাইন ক্লাস নিয়েছে কয়েকটি স্কুল।
যেমন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগ জানালেন, পুজোর ছুটির মধ্যেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য তাঁরা বেশ কয়েকটি অনলাইন ক্লাস নিয়েছেন। এমনিতেই ছুটির কারণে ওই ছাত্রীদের ক্লাস খুব কম হয়েছে। ছুটির পরে স্কুল খোলার কিছু দিনের মধ্যেই হবে টেস্ট। পাপিয়া বলেন, ‘‘এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পুরো পাঠ্যসূচির উপরে হবে। অথচ এই পরীক্ষার্থীরা করোনার কারণে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়নি। সুতরাং এটাই তাদের জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা হতে চলেছে। ফলে অনেকেই ভীত। ওরাই প্রথম প্রস্তাব দেয়, পুজোর ছুটিতে কয়েকটা ক্লাস করানো হলে উপকার হয়। শিক্ষিকারাও রাজি হয়ে যান। ফলে কোনও অসুবিধাই হয়নি।’’
বাঙুরের নারায়ণ দাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া জানালেন, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের জন্যই অনলাইন ক্লাস নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্মীপুজো থেকে কালীপুজোর মাঝে ১৫ দিন ক্লাসগুলি হয়েছে। তবে কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকাকে জোর করে ক্লাস নেওয়ার কথা বলা হয়নি। যাঁরা ছুটির মধ্যে বা ওই সময়ে বেড়াতে যাননি কিংবা যাঁরা ক্লাস নিতে ইচ্ছুক, তাঁরাই নিয়েছেন।
বেলগাছিয়া মনোহর অ্যাকাডেমির শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্ত জানাচ্ছেন, বিভিন্ন শ্রেণির আলাদা আলাদা সেকশনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। পুজোর ছুটিতে তাদের আলাদা ভাবে নয়, বরং ওই গ্রুপের মাধ্যমে ক্লাস হয়েছে। সুমনা বলেন, ‘‘আমি বাংলার শিক্ষিকা। যেমন, একাদশ-দ্বাদশের সেকশনগুলির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বাংলার কোনও অধ্যায় পড়ানোর অডিয়ো ক্লিপ পোস্ট করেছি। পড়ুয়ারা সেটা শুনেছে। তার পর হোয়াটসঅ্যাপেই তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন লিখে পাঠিয়েছি। পড়ুয়ারা সেগুলোর উত্তর দিয়েছে।’’ সুমনা জানান, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যে অডিয়ো ক্লিপ তিনি দিয়েছেন, তা গ্রুপেই থেকে যাচ্ছে। ফলে যে কোনও পড়ুয়া ইচ্ছে মতো পরবর্তী কালে সেই অডিয়ো ক্লিপ শুনে পড়া বুঝে নিতে পারছে। তাঁর মতে, এই সুবিধা আবার শ্রেণিকক্ষে পড়ানোয় পাওয়া যায় না।
তবে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই জানাচ্ছেন, পুজোর ছুটিতে অনলাইন ক্লাস হলেও পড়ুয়াদের কেউ কেউ বেড়াতে যাওয়ায় বা অন্য কোনও কারণে সেই ক্লাস করতে পারেনি। তবে ওই পড়ুয়াদের ভয়ের কিছু নেই। কারণ, পুজোর ছুটির পরে স্কুল খুললে কয়েকটি অতিরিক্ত ক্লাসও নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে স্কুলগুলি।