কার্নিভালের আগের দিনের রেড রোড। ছবি: পিটিআই।
পুজো মিটতেই খুলে গিয়েছে ব্যাঙ্ক, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান-সহ একাধিক বেসরকারি অফিস। এরই মধ্যে আজ, শুক্রবার রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল। সপ্তাহের কাজের দিনে এই শোভাযাত্রার জন্য শহরের একটি বড় অংশ যানজটের কবলে পড়বে কি না, আপাতত বড় হয়ে উঠেছে সেই প্রশ্নই। কারণ, ইতিমধ্যেই লালবাজারের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, আজ দীর্ঘ সময় মধ্য কলকাতার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ রাখা হবে। যদিও পুলিশকর্তাদের আশ্বাস, বিকল্প পথে যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। তাই শহরের বড় অংশ অচল হওয়ার ভয় নেই।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ বারের কার্নিভালে অংশগ্রহণ করবে ৯৬টি পুজো। গত বছরের তুলনায় পুজোর সংখ্যা সে ভাবে না কমায় প্রায় ঘণ্টা চারেক রেড রোডে অনুষ্ঠান চলবে বলে অনুমান পুলিশকর্তাদের। সেই অনুযায়ী যাবতীয় পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। বৃহস্পতিবার জারি করা এক নির্দেশিকায় কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ জানিয়েছে, কার্নিভালের জন্য আজ দুপুর ২টো থেকে অনুষ্ঠান শেষ হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে রেড রোড, লাভার্স লেন, কুইন’স ওয়ে, এসপ্লানেড রো, পলাশি গেট রোড। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল ন’টা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা হবে রেড রোডের যান চলাচল। যান নিয়ন্ত্রণ হবে খিদিরপুর রোড ও ডাফরিন রোডেও। পাশাপাশি, পার্কিংয়ের ক্ষেত্রেও থাকছে একাধিক বিধিনিষেধ। মেয়ো রোড, ক্যাথিড্রাল রোড, জওহরলাল নেহরু রোড, কুইন’স ওয়ে, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, হেয়ার স্ট্রিট-সহ রেড রোড সংলগ্ন একাধিক রাস্তায় ওই বিধিনিষেধ বলবৎ হবে।
তবে অফিসযাত্রীদের আশঙ্কা, সপ্তাহের কাজের দিনে মধ্য কলকাতার একটি বড় অংশ এত দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকলে যানজট এড়ানো যাবে না। একই অনুমান ট্র্যাফিকের নিচুতলার কর্মীদের একাংশেরও। ধর্মতলা চত্বরে ট্র্যাফিক সামলানো এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘পুজোর পরে বহু বেসরকারি অফিস খুলে গিয়েছে। রাস্তায় গাড়ির চাপও বেড়েছে। এই অবস্থায় চার-পাঁচ ঘণ্টা ধরে অনুষ্ঠান চললে গাড়ির জট সামলানো কঠিন হবে।’’
রেড রোডের কার্নিভাল ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছে লালবাজার। এ দিনের অনুষ্ঠানে ভিভিআইপি-সহ প্রায় ২০ হাজার দর্শকের সমাগম হতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। থাকছেন বিদেশি অতিথিরাও। তাই নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনও রকম আপস করতে চাইছে না পুলিশ। বৃহস্পতিবার থেকেই প্রায় গোটা রেড রোডের দখল নিয়েছেন পুলিশকর্মীরা। পুলিশ কুকুর এনে দফায় দফায় চলেছে তল্লাশি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রেড রোড এবং সংলগ্ন এলাকায় আজ আড়াই হাজার অতিরিক্ত পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে। পুরো রেড রোডকে একাধিক জ়োনে ভাগ করে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ১৬ জন উপ-নগরপাল এবং আট জন যুগ্ম নগরপাল পদমর্যাদার আধিকারিকের উপরে। প্রস্তুত রাখা হচ্ছে কুইক রেসপন্স টিম, বিশেষ বাহিনী এবং অ্যাম্বুল্যান্স। নজরদারি চলবে ক্যামেরার মাধ্যমেও। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই নিরাপত্তারক্ষীরা গোটা রেড রোড পরীক্ষা করেছেন। পুলিশ কুকুর, মেটাল ডিটেক্টর দিয়েও পরীক্ষা করা হয়েছে। কোনও রকম ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না।’’