Durga Puja 2022

পুজোর চেনা ছন্দে ফিরতে চায় বহু আবাসন

দু’বছর করোনার সংক্রমণের জেরে শহরের একাধিক আবাসন পুজো সেরেছিল কার্যত নমো নমো করে। ছোঁয়াচ এড়াতে বসে খাওয়ার বদলে ফ্ল্যাটের দরজায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল প্যাকেট।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:২৬
Share:

কোনও কোনও আবাসন আবার বাজেট বাড়িয়ে হাঁটছে থিম পুজোর পথে। ফাইল ছবি

দু’বছর পরে ফের চেনা দৃশ্য ফিরছে শহরের বিভিন্ন আবাসনের পুজোয়। হইহুল্লোড়, খাওয়াদাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান— পুজো ঘিরে সব কিছুরই আয়োজন চলছে জোরকদমে। কোনও কোনও আবাসন আবার বাজেট বাড়িয়ে হাঁটছে থিম পুজোর পথে।

Advertisement

গত দু’বছর করোনার সংক্রমণের জেরে শহরের একাধিক আবাসন পুজো সেরেছিল কার্যত নমো নমো করে। ছোঁয়াচ এড়াতে বসে খাওয়ার বদলে ফ্ল্যাটের দরজায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল প্যাকেট। বন্ধ রাখা হয়েছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। এমনকি, পুজোর ক’দিন আবাসনের ভিতরে বহিরাগতদের প্রবেশের ক্ষেত্রেও আরোপ করা হয়েছিল নানা বিধিনিষেধ। এ বছর অবশ্য সেই কড়াকড়ি নেই। শহরের ছোট-বড় একাধিক আবাসনে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, প্রাক্‌-করোনার মতো জাঁকজমক সহকারেই হবে পুজো। প্যাকেটের বদলে ফিরে আসছে একসঙ্গে বসে খাওয়া। ফিরছে বাইরের শিল্পীদের এনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আনন্দপুর সংলগ্ন একটি আবাসনে পুজোর প্রস্তুতি চলছে পূর্ণ উদ্যমে। কোভিডের আগে যে ভাবে পুজো হত, তার চেয়েও বড় করে হবে এ বছরের পুজো, জানালেন ওই আবাসনের উৎসব কমিটির অন্যতম সদস্য, অভিনেতা-পরিচালক অরিন্দম শীল। তাঁর কথায়, ‘‘এ বছর আমাদের বিরাট আয়োজন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বড় প্রতিমা, পাঁচ দিন ধরে বসে খাওয়াদাওয়া— সব ব্যবস্থা থাকছে।’’ বাইরের নামী শিল্পীরাও অনুষ্ঠান করবেন বলে জানালেন তিনি। বাজেট নিয়ে মুখ না খুললেও আগের তুলনায় তা যে অনেকটাই বেড়েছে, সে কথা স্বীকার করে নিলেন অরিন্দম।

এই আবাসনের সঙ্গে আয়োজনের নিরিখে কার্যত সমানে সমানে টক্করের কথা জানালেন প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের আর একটি আবাসনের বাসিন্দারা। সেখানকার উৎসব কমিটির তরফে চিত্রলেখা দত্ত বললেন, ‘‘মহালয়ার দিন আনন্দমেলা দিয়ে শুরু হচ্ছে এ বছরের পুজো। ইতিমধ্যেই মণ্ডপ তৈরি প্রায় শেষের পথে। পুজোর ক’দিন খাওয়াদাওয়া, বাইরের শিল্পীদের অনুষ্ঠান, সবই থাকছে। তবে সব কিছুই সরকারি নির্দেশিকা মেনে করা হবে।’’

Advertisement

বাজেট বাড়িয়ে থিম পুজোর আয়োজনের কথা জানাল কালী পার্কের একটি আবাসনের উৎসব কমিটি। মণ্ডপ জুড়ে বাংলা পটশিল্পের চালচিত্র। বাজেট বাড়ায় আবাসিকদের চাঁদাও কিছুটা বেড়েছে। পুজো কমিটির সেক্রেটারি অভ্র পাল বললেন, ‘‘চণ্ডীমণ্ডপের আদলে হচ্ছে মণ্ডপ। থাকছে গ্রামীণ পটশিল্পের ছোঁয়া।’’ এ বছর বাজেট ৯-১০ লক্ষ টাকা, জানালেন তিনি। কোভিডের কথা ভেবে বসে খাওয়ার পাশাপাশি প্যাকেটের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

মুকুন্দপুরের একটি আবাসন আবার সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের সাহায্য করে বার্তা দিতে চাইছে। সেখানকার উৎসব কমিটির সদস্য সোমা ঘোষ বললেন, ‘‘এ বার প্যাকেট নয়, বসে খাওয়াদাওয়া হবে। তবে আমাদের মূল লক্ষ্য, পিছিয়ে পড়া মানুষদের সাহায্য করা। ইতিমধ্যেই আমরা একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। পুজোর ক’দিন সকলের মুখে হাসি ফুটিয়েই উৎসব পালন করব। পুজো মণ্ডপেও সেই বার্তা থাকবে।’’

গত বছরের তুলনায় বাজেট কিছুটা বাড়িয়েই এ বছর পুজো করছে বাইপাসের একটি আবাসন। তবে এখনও কোভিড-পূর্ববর্তী জাঁকজমকে ফিরছে না তারা। ওই আবাসনের পুজো কমিটির মুখ্য উপদেষ্টা সুবীর বসাক বললেন, ‘‘উৎসবের আয়োজন চলছে। বাজেটও কিছুটা বেড়েছে। তবে একটু বুঝে চলতে চাইছি।’’ সব মিলিয়ে করোনা পেরিয়ে এ বছর চেনা ছন্দে ফিরছে আবাসনের পুজোগুলি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement