ওই মেট্রোর আতঙ্কিত যাত্রী। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
ট্রেনে উঠতে গিয়ে পুরো শরীর ঢোকাতে পারেননি। নামতে গেলেও হাত আটকে যায়। কিন্তু মেট্রোর দরজার ফাঁকে কিছু আটকে গেলে দরজা বন্ধ হলেও সঙ্গে সঙ্গে খুলে আবার বন্ধ হওয়ার কথা। আবার দরজার মধ্যে কিছু আটকে পড়লে ট্রেন চলারই কথা নয়। তবু কেন এমন ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটল? এই একটি প্রশ্নের আড়ালেই আরও অনেক প্রশ্ন। সে প্রশ্ন যেমন গাফিলতি নিয়ে, তেমনই যান্ত্রিক ত্রুটি নিয়েও।
• হাত আটকে থাকলেও ট্রেন চলতে শুরু করল কেন?
আটটি কামরার মোট ৩২টি দরজার প্রতিটিতে ‘রিলে’ লাগানো থাকে। দরজা পুরো বন্ধ না-হলে প্রথমে কয়েক ইঞ্চি ফাঁক হয়ে তার পর বন্ধ হওয়ার চেষ্টা করে। তখনও বন্ধ না হলে আর একটু বেশি ফাঁক হয়ে বন্ধ হওয়ার চেষ্টা করে। তখনও বন্ধ না-হলে দরজা পুরোপুরি খুলে যায়। এ ক্ষেত্রে ‘রিলে’ ঠিকঠাক কাজ করেনি বলেই সন্দেহ।
• একটি দরজাও বন্ধ না হলে তো মেট্রোর মোটরে বিদ্যুৎ সরবরাহ হওয়ার কথা নয়।
এ ক্ষেত্রে ‘রিলে’র যান্ত্রিক ত্রুটির দিকেই আঙুল তুলছেন মেট্রো কর্তাদের একাংশ।
• ‘রিলে’ কাজ না-করলে বিপদ এড়ানোর কি উপায় নেই?
দরজা বন্ধ করার পরে গাড়ি ছাড়ার সঙ্কেত দেওয়ার আগে গার্ডের দেখে নেওয়ার কথা কেউ আটকে আছেন কি না। তাঁর কামরার কাছে প্ল্যাটফর্মে সিসি ক্যামেরার মনিটর আছে। প্ল্যাটফর্মে থাকা রেল পুলিশেরও নজর রাখার কথা।
• রেলপুলিশ কর্মী কি বাঁশি বাজিয়ে সতর্ক করেছিলেন?
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ট্রেন চলতে শুরু করার পরে আরপিএফ এবং উপস্থিত অন্যরা চিৎকার করতে শুরু করেন। কিন্তু এই নতুন রেক খুব দ্রুত গতি বাড়ায়। ফলে থামতে সময় লেগেছে।
• নতুন রেকের গুণমান কি সন্তোষজনক নয়?
চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে তৈরি রেকগুলির গুণমান নিয়ে গোড়া থেকেই প্রশ্ন আছে। যার মধ্যে দরজার সমস্যাও ছিল। সে সব সারাতে গিয়ে প্রায় দেড় বছর ফেলে রাখা হয় রেকগুলি। সম্প্রতি তিনটি রেক চালানো হচ্ছে।
• কামরার ভিতরে অ্যালার্ট বোতাম কি টেপা হয়েছিল?
যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, বোতাম টেপার পরেও ট্রেন থামেনি। মেট্রো কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, অ্যালার্ট বোতাম টেপার পরেও ট্রেন থামাতে একটু সময় লাগবেই। এ ক্ষেত্রে ইমার্জেন্সি ব্রেক কষেই ট্রেন থামানো হয় বলে তাঁদের দাবি।