অনুমতি না নিয়েই কয়েকশো পুজো উত্তর শহরতলিতে

পুলিশ সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসত-সহ মধ্যমগ্রাম ও দত্তপুকুর থানা এলাকা মিলিয়ে অনুমতিবিহীন পুজোর সংখ্যা ৩৩০-এরও বেশি।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৩০
Share:

ফাইল চিত্র।

‘হুকিং’ করে চুরি করা হচ্ছে বিদ্যুৎ। যা দিয়ে বাজানো হচ্ছে মাইক, রাস্তা মুড়ে দেওয়া হচ্ছে আলোর মালায়। জাঁকজমক করে দুর্গাপুজো হচ্ছে পুলিশ, প্রশাসন বা দমকলের অনুমতি ছাড়াই। বছরের পর বছর এ ভাবেই হয়ে চলেছে একাধিক অবৈধ পুজো। কিন্তু অভিযোগ, ওই সমস্ত পুজো বন্ধ করতে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ বা প্রশাসন। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, উচ্চগ্রামে মাইক বাজানো থেকে শুরু করে নানা রকম অনিয়ম চলে ওই সমস্ত পুজোয়। ভয় থাকে আগুন লাগারও। তাঁদের প্রশ্ন, যে সমস্ত পুজো অনুমতিই নেয় না, তারা নিয়মই বা মানতে যাবে কেন?

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসত-সহ মধ্যমগ্রাম ও দত্তপুকুর থানা এলাকা মিলিয়ে অনুমতিবিহীন পুজোর সংখ্যা ৩৩০-এরও বেশি। প্রশাসনের তথ্যই বলছে, এর মধ্যে অন্তত ৫০টি পুজো গত পাঁচ বছরের মধ্যে চালু হয়েছে। স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, প্রশাসনের অনুমতি নিলে উদ্যোক্তাদের নিয়ম মানার একটা বাধ্যবাধকতা থাকে। ওই সমস্ত পুজোয় প্রশাসন নজরদারিও চালায়। বৈধ পুজোর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে কী করা যাবে আর কী যাবে না, সে সব জানিয়েও দেয় পুলিশ-প্রশাসন। কিন্তু এ সব নিয়ম-নীতির বালাই থাকে না অনুমতিবিহীন পুজোয়। রাস্তা আটকেই দিব্যি তৈরি করা হয় মণ্ডপ। যানজটের ঠেলায় হিমশিম খেতে হয় সাধারণ মানুষকে।

বারাসতের পুলিশই জানাচ্ছে, ওই থানা এলাকায় খাতায়-কলমে অনুমতিপ্রাপ্ত পুজোর সংখ্যা ১৫৫টি এবং অনুমতিবিহীন পুজোর সংখ্যা ১০৫টি। মধ্যমগ্রাম ও দত্তপুকুর থানা এলাকায় এই সংখ্যা যথাক্রমে ৭৫ ও ১০০ এবং ২৫ ও ১২৫টি।

Advertisement

অনুমতি না নিয়ে পুজো করছেন কেন?

অধিকাংশ পুজো উদ্যোক্তারই দাবি, নিয়ম মেনে আবেদন করা সত্ত্বেও প্রশাসনের অনুমতি মিলছে না। তাই অনুমতি ছাড়াই পুজো করতে হচ্ছে। অন্য দিকে, পুলিশ-প্রশাসন জানাচ্ছে, নতুন পুজোর অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বিধিনিষেধ রয়েছে। তাই এই ডামাডোলের সুযোগ নিয়ে চলছে বেআইনি পুজো।

অনুমতি ছাড়া এত পুজো চলতে দেওয়া হচ্ছে কেন?

এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি পুলিশ বা প্রশাসন। জেলা পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘পুজোর অনুমতি পুলিশ দেয় না। দেয় জেলা প্রশাসন।’’

ওই তিনটি থানা এলাকায় প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা বারাসতের মহকুমাশাসক তাপস বিশ্বাস বলেন, ‘‘অনুমতি না নেওয়া পুজোর কথা জানা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’ কিন্তু পুলিশি পরিসংখ্যানই বলছে, ৩৩০টি পুজো অনুমতি ছাড়া চলছে। এ কথা শুনে মহকুমাশাসকের জবাব, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement