Coronavirus in Kolkata

Kolkata Police: করোনায় কাবু বড়বাবু থেকে কনস্টেবল, সংক্রমণ ঠেকাতে প্যান্ডেল বেঁধে কাজ চালাচ্ছে পুলিশ

এ রাজ্যে এবং বিশেষত কলকাতা শহরে সংক্রমণ বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। একের পর এক পুলিশকর্মীও আক্রান্ত হচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৫৮
Share:

ভবানীপুর থানার বাইরে দেওয়া হয়েছে গার্ডরেল। সেখানে দাঁড়িয়েই পুলিশের সঙ্গে কথা বলছেন থানায় আসা লোকজন। নিজস্ব চিত্র।

বুধবার সকালে যে সংখ্যাটা ছিল ১২০, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক লাফে তা পৌঁছে গিয়েছে ২২৫-এ! বড়বাবু থেকে শুরু করে কনস্টেবল, কলকাতা পুলিশে করোনার হামলায় কাবু অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণের হাত থেকে বাকিদের বাঁচিয়ে কোনও মতে থানার কাজ চালিয়ে যাওয়াটাই এখন চ্যালেঞ্জ পুলিশের কাছে। বাকি পুলিশকর্মীরা যাতে সংক্রমিত না হন, তার জন্য ইতিমধ্যেই একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন থানায়। কোথাও থানার বাইরে প্যান্ডেল বেঁধে কাজকর্ম সারার ব্যবস্থা হয়েছে, কোথাও আবার থানার বাইরে ব্যারিকেড করে বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে পুলিশ। কোনও কোনও থানায় আবার লাগানো হয়েছে দড়ি। এ ছাড়া, প্রতিটি থানায় জীবাণুনাশও করা হচ্ছে নিয়মিত। এর পরেও সংক্রমণের হাত থেকে নিজেদের বাঁচানো যাবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছেন না বিভিন্ন থানার পুলিশকর্মীরা।

Advertisement

এ রাজ্যে এবং বিশেষত কলকাতা শহরে সংক্রমণ বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। একের পর এক পুলিশকর্মীও আক্রান্ত হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের মোট ২২৫ জন কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। একাধিক পুলিশকর্তাও আক্রান্ত। শুধুমাত্র ভবানীপুর থানারই প্রায় ৩০ জন পুলিশকর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। এ ছাড়া গল্ফ গ্রিন, বড়বাজার, কসবা, একবালপুর, মুচিপাড়া, পার্ক স্ট্রিট, সরশুনা, শেক্সপিয়র সরণি, ফুলবাগান, এন্টালি, মানিকতলা ও হরিদেবপুর থানাতেও একাধিক পুলিশকর্মী আক্রান্ত।

এ দিন ভবানীপুর থানায় গিয়ে দেখা গেল, বাইরে গার্ডরেল। গেটে দাঁড়িয়ে দু’জন পুলিশকর্মী। বিভিন্ন প্রয়োজনে আসা লোকজনকে থানা চত্বরের বাইরেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। সেখান থেকেই ঘটনা-পিছু এক জনকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। তার আগে দেহের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে ওই ব্যক্তির। ঘটনা-পিছু ভিতরে এক জনকে প্রবেশাধিকার দেওয়ার পথে আরও কয়েকটি থানা। কসবা থানাতেও ইতিমধ্যে একাধিক পুলিশকর্মী আক্রান্ত। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ওই থানার বাইরে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বসেই থানার কাজকর্ম চালানো হবে। সব রকম অভিযোগও জানানো যাবে সেখানেই। এ দিন দুপুরেই ওই প্যান্ডেলের কাজ শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, করোনার প্রথম ঢেউয়ে কসবা থানার প্রায় ৩২ জন কর্মী আক্রান্ত হয়েছিলেন। সে বারও থানার বাইরে প্যান্ডেল করে কাজ চালানো হয়েছিল। এ বছর থানার দু’-এক জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হতেই প্যান্ডেলের ব্যবস্থা করা হয়। ওই থানার এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘এখন তো মনে হচ্ছে, এই সুস্থ আছি, আবার হয়তো এই আক্রান্ত হলাম। থানার বাইরে বসে কাজ মেটাতে পারলে বাকিদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা কমবে।’’

Advertisement

অবাধ প্রবেশ বন্ধ করেছে গল্ফ গ্রিন, মানিকতলা এবং উল্টোডাঙা থানাও। রীতিমতো দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে তবে থানায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে বহিরাগতদের। গল্ফ গ্রিন থানার এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘কলকাতার যা অবস্থা, এখন তো মনে হচ্ছে, সামনে যে আসছে, সে-ই পজ়িটিভ। ভয় নিয়েই কাজ করে যেতে হচ্ছে।’’ কিন্তু ছোঁয়াচ এড়াতে এত কিছুর পরেও সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে তো? উত্তরটা জানা নেই পুলিশকর্মীদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement