ঢল: হাতিবাগানে জনারণ্য। রবিবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
পুজোর কেনাকাটা করতে বেরোনো বেপরোয়া জনতার ঢল দেখে প্রশ্ন উঠছে, এখনই এই হলে পুজোর দিনগুলোয় কী হবে? চিকিৎসকদের বড় অংশের আশঙ্কা, উৎসবের প্রস্তুতির সময়েই যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে পরে হাসপাতালগুলিতে কোভিড রোগীর শয্যা মিলবে না। এই পরিস্থিতিতে রবিবারও পুজোর বাজারে বেপরোয়া জনতার ভিড়ই চোখে পড়ল। দূরত্ব-বিধি মানার বালাই তো নেই-ই, অনেকের আবার নেই মাস্ক পরার দায়িত্ববোধও!
• অনিমিতা রায়, গড়িয়াহাট
সন্ধ্যায় তখন ভিড়ে পা ফেলারও কার্যত জায়গা নেই। সেখানেই পুজোর কেনাকাটা করতে সপরিবার হাজির চেতলার বাসিন্দা অনিমিতা। নাক-মুখ ঢাকার বদলে মাস্ক ঝুলছে গলার কাছে। বললেন, ‘‘সব জানি। কিন্তু সব সময়ে মাস্ক পরে থাকার কথা মনে রাখা যায় না।’’ আরও বললেন, ‘‘যা হওয়ার হবে, পুজোর আগে আর এ নিয়ে ভাবব না।’’
• স্বপ্না দাস বৈরাগী, ধর্মতলা
রবিবার দুপুর থেকেই ধর্মতলায় এমন ভিড় বাড়তে থাকে যে বাড়তি পুলিশ নামাতে হয়। সেখানেই প্রবল ভিড়ে মাস্ক ছাড়া ঘুরতে থাকা স্বপ্না বললেন, ‘‘এই সেরেছে! ধরা পড়ে গেলাম।’’ হাসতে হাসতে এর পরে তিনি বলেন, ‘‘সবাই ঠিকই বলছে। মাস্ক পরা উচিত। ব্যাগে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার সবই আছে। বিশ্বাস করুন, আর মাস্ক খুলে ঘুরব না।’’
• মনীষা চট্টোপাধ্যায়, হাতিবাগান
কেনাকাটা করতে আসা ভিড়ের চাপে বিধান সরণিতে পরপর দাঁড়িয়ে গিয়েছে গাড়ি। তার মধ্যেই গলার কাছে মাস্ক নামিয়ে ঘুরতে থাকা বেলঘরিয়ার বাসিন্দা মনীষা বললেন, ‘‘কিনতে কিনতে আসলে হাঁফিয়ে গিয়েছি।’’ একটু থেমেই তিনি বললেন, ‘‘ভুলেই গিয়েছিলাম, আসলে এই মাত্র খাবার খেলাম।’’ তাঁর সঙ্গে থাকা শিশুকন্যারও মুখে মাস্ক নেই। পরাননি কেন? মায়ের উত্তর, ‘‘বাচ্চা যখন গরমে কাঁদে, ভাইরাসও ভয়ে পালায়।’’
• শুভজিৎ বিশ্বাস, কসবার শপিং মল
কান থেকে ঝুলছে মাস্ক। কেন? সরশুনার বাসিন্দা শুভজিৎ বললেন, ‘‘মাস্ক থাকলে ভাল করে ফোনে কথা শোনা যায় না। এক জনের সঙ্গে মনের কথা হচ্ছিল, তাই খুলে ফেললাম।’’
• সৌরভ নন্দী, বাইপাসের শপিং মল
নিজেকে গবেষক বলে দাবি করা টালিগঞ্জের সৌরভের মাস্ক নামানো গলার কাছে। বললেন, ‘‘আমি গবেষক, জানি কখন কী করতে হয়। ভাইরাস একটা ব্যাপার ঠিকই, কিন্তু তার চেয়েও বড় ব্যাপার ক্যানসার নিয়ে আমি কাজ করি।’’ তার জন্য করোনার ভয় নেই? মাস্ক মুখে দিয়ে উত্তর, ‘‘গরম লাগলেই কিন্তু আবার খুলে ফেলব।’’