ফাইল চিত্র।
প্রতিষেধক নেওয়ার পরে কেটে গিয়েছে বেশ কিছু দিন। কিন্তু কোনও এসএমএস আসেনি তাঁদের মোবাইলে। আরও অভিযোগ, নিদিষ্ট পোর্টালে গিয়েও প্রতিষেধক নেওয়ার তথ্য মিলছে না। শহরে এমন ভুক্তভোগীর সংখ্যা কম নয়। আর কসবার ভুয়ো প্রতিষেধক-কাণ্ডের পরে এসএমএস না মেলায় ওঁদের আতঙ্ক কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। তাঁরা দ্বিতীয় ডোজ় কী ভাবে নেবেন, সেই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে।
করোনা প্রতিষেধক নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেকের মোবাইলে একটি মেসেজ আসছে। সেই সঙ্গে মিলছে প্রতিষেধক নেওয়ার শংসাপত্র ডাউনলোড করার সুযোগ। সেই মেসেজ বা শংসাপত্র দেখিয়ে মিলছে দ্বিতীয় ডোজ়। কিন্তু গ্রহীতাদের একাংশের অভিযোগ, প্রতিষেধক নেওয়া হলেও অনেকেই এসএমএস পাননি। এমনকি নির্দিষ্ট হেল্পলাইনে ফোন করা হলেও সদুত্তর মিলছে না। বলা হচ্ছে, প্রতিষেধক প্রদান কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে। যাঁরা পুরসভার শিবির থেকে প্রতিষেধক নিয়েছেন, তাঁরা সেখানে যোগাযোগ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা কম্পিউটারে তথ্য নথিভুক্ত না হওয়ার কথা বলে দায় এড়াচ্ছেন। কখনও আবার বলা হচ্ছে, দু’-তিন দিনের মধ্যেই মোবাইলে মেসেজ আসবে।
এমন সমস্যা নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই শহরের বিভিন্ন প্রতিষেধক কেন্দ্রে হাজির হচ্ছেন অনেকে। তাঁদের প্রশ্ন, এসএমএস না এলে কী ভাবে তাঁরা দ্বিতীয় ডোজ় নেবেন? এর উত্তর নেই প্রতিষেধক দিতে আসা স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছেও। এক গ্রহীতার কথায়, ‘‘শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে প্রতিষেধক নিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও মেসেজ না পেয়ে হেল্পলাইনে ফোন করি। সেখান থেকে হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। হাসপাতালে গেলে আবার একটি লিঙ্ক দিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। যদিও সেই লিঙ্ক এখনও আসেনি। কোউইন পোর্টালে দেখাচ্ছে ‘নট ভ্যাকসিনেটেড’। দ্বিতীয় ডোজ়ের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যায় পড়তে হবে কি না, সেই প্রশ্নই এখন মাথায় ঘুরছে।’’
উত্তর কলকাতার এক বাসিন্দা রাজ দাস বলেন, ‘‘পাড়ার এক জন বলেছিলেন, পুরসভার শিবির থেকে প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য। সেই মতো দু’ঘণ্টা লাইন দিয়ে গত ২৩ জুন প্রতিষেধক নিই। বলা হয়েছিল, মোবাইলে মেসেজ আসবে। কিন্তু কোথায় কী? কসবার ঘটনার পরে তো আতঙ্কে আছি। আসল প্রতিষেধক দিল না নকল, সেটাই বুঝতে পারছি না!’’ যদিও পুরসভার শিবির থেকে প্রতিষেধক নিয়ে এসএমএস না পাওয়ার প্রসঙ্গে পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা বিধায়ক অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘এসএমএস না পেলেও আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। প্রতিষেধক দেওয়ার সময়ে যে স্লিপ দেওয়া হচ্ছে, সেটি দেখালেই দ্বিতীয় ডোজ় মিলবে।’’
এ বিষয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি পরিচালিত হয় কোউইন পোর্টালের মাধ্যমে। সেখানে কী গন্ডগোল হচ্ছে, তা আমাদের পক্ষে বলা মুশকিল। তবে এসএমএস না এলেও দ্বিতীয় ডোজ় পেতে সমস্যা হবে না। প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রহীতার মোবাইল এবং আধার কার্ড নম্বর নথিভুক্ত হয়ে যাচ্ছে। মেসেজ না এলেও দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার সময়ে ওই মোবাইল নম্বর বা আধার কার্ড নম্বর দেখালেই হবে। তবে যদি এমন হয় যে, একটি শিবির থেকে প্রতিষেধক নেওয়া কারও ক্ষেত্রেই এসএমএস আসেনি, তা হলে সেটা সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের নজরে আনতে হবে।’’