আকাশ-ছোঁয়া: সার্বিক পরিকল্পনার অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র
সাময়িক ক্ষতে প্রলেপ নয়। দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা তৈরি করে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুকের রোগ সারাতে চাইছে নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ।
মাত্র ৪৩২ একর আয়তনের পাঁচ নম্বর সেক্টর। পরিকল্পনার অভাবে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুক জন্মলগ্ন থেকেই নানা সমস্যায় আক্রান্ত। ২০০৬ সালে পাঁচ নম্বর সেক্টরের উন্নয়নের জন্য নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ তৈরি হয়। তার পর একাধিক পরিকল্পনা হলেও কাজের কাজ হয়নি।
এ বার তাই দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা হচ্ছে। রাস্তা, জল, আলো, ট্র্যাফিক, নিকাশি, হকার-সহ নানা সমস্যা মেটাতে সার্বিক পরিকল্পনা তৈরি করছেন নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি সল্টলেকের উন্নয়ন ভবনে এক অনুষ্ঠানে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুকের পরিকাঠামোর উন্নতিতে দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুকগুলির উন্নতি নিয়ে রাজ্য সরকার সচেষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘বাম আমলে অপরিকল্পিত ভাবে উন্নয়নের চেষ্টা হয়েছিল। সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তাই এই পরিকল্পনা।’’
পাঁচ নম্বর সেক্টরে রাস্তা ছিল ১৭ কিমি। তুলনায় বহুতলের সংখ্যা বেশি। গাড়ির চাপও পাল্লা দিয়ে বাড়ায় পরিকাঠামোর উপর চাপ বাড়ছে।
আরও পড়ুন...
সোনারপুরে জলপ্রকল্পের কাজ শুরু
এই শিল্পতালুকে নিকাশি ও জলের পরিকাঠামো তৈরি হলেও সমস্যা রয়েছে। অন্য দিকে, হকার সমস্যা প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ। যদিও রাস্তার ধারে কিংবা ফুটপাথ দখল করে চলা ওই অস্থায়ী খাবারের দোকানগুলির উপরেই কয়েক হাজার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী নির্ভরশীল। ফুটপাথ মুক্ত করতে কেন্দ্রীয় ভাবে ফুডকোর্টের পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু শিল্পতালুকের চরিত্র অনুসারে সেই প্রকল্পকে কার্যকর করা যায়নি।
ট্র্যাফিক সমস্যা মেটাতে এক সময়ে রিং রোডের পরিকল্পনা হয়। তা তৈরিও হয়েছে। তখন পরিকল্পনা হয়েছিল শিল্পতালুকের ভিতরে গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হবে না। শহরের ভিতরের প্রান্তগুলির মধ্যে যোগাযোগে স্কাইওয়ে প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন পুরমন্ত্রী। তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা না মেলায় সেই প্রকল্প বাতিল করতে হয়।
গোটা শিল্পতালুক জুড়ে তারের জঙ্গল সমস্যায় ফেলেছে প্রশাসনকে। জল সরবরাহ, নিকাশি, ট্র্যাফিক ব্যবস্থা নিয়েও সমস্যা রয়েছে। এই সবের সমাধানে পরিকল্পনা করছে নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ। ড্রেনেজ পাম্পিং স্টেশন, রিং রোডের সম্প্রসারণ, পার্কোম্যাট, সৌন্দর্যায়ন, গোটা শিল্পতালুকে এলইডির ব্যবহার, সম্পত্তি কর আদায়ে জোর দেওয়ার মতো একগুচ্ছ পরিকল্পনা কার্যকরী হবে। শিল্পতালুক জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হবে ফুডকোর্ট। সেখানেই দোকানদারদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুরমন্ত্রী।