প্রতীকী চিত্র।
টাকা পয়সা নিয়ে ঝামেলার জেরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মধ্যে বাঁশ-রড দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হল ৪০ বছরের এক ব্যক্তিকে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। তবে হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ি থেকে সামান্য দূরে এত বড় ঘটনা ঘটার পর তা পুলিশের চোখে পড়ল না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্রের খবর, স্থানীয় কিছু বাসিন্দার মাধ্যমে মঙ্গলবার ভোর রাতে পুলিশ খবর পায় যে কয়েকজন ব্যক্তি একজনকে রাস্তায় মারধর করছে। পুলিশ গিয়ে মেডিক্যাল কলেজের সামনের রাস্তার উপর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে এক ব্যক্তিকে। নীলরতন সরকার মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। প্রথমে অজ্ঞাতপরিচয় থাকলেও, পরে জানা যায় মৃতের নাম রবিন দাস।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ঘটনার সূত্রপাত মেডিক্যাল কলেজের ২ নম্বর গেটের কাছে রোগীদের আত্মীয়দের থাকার জন্য নির্দিষ্ট রাত্রি নিবাস। তদন্তে জানা যায়, রবিন হাসপাতাল চত্বরের পরিচিত দালাল। কয়েক দিন আগে সুশান্ত মন্ডল নামে একজনের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নেন। অভিযোগ, সুশান্তের ক্যানসার আক্রান্ত ছেলের জন্য ওষুধ এনে দেবে বলে টাকা নিয়েছিলেন রবিন। কিন্তু ওষুধ দেননি। একই ভাবে আরও কয়েকজনের কাছ থেকেও তিনি টাকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ভোররাতে রবিনকে পাকড়াও করে সুশান্ত এবং আরও কয়েকজন যাঁরা প্রতারণার অভিযোগ করেছেন। টাকা ফেরত না দেওয়ায় শুরু হয় বচসা। তারপরই রবিনকে মারধর করা শুরু হয়। অভিযোগ, মারধরে সুশান্তের সঙ্গে যোগ দেন গোপাল মাইতি এবং অমিত সাহা নামে আরও দু’জন। রড, বাঁশ দিয়ে শুরু হয় বেধড়ক মার। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মার খেতে খেতে কোনও মতে পালিয়ে রাস্তায় চলে যায় রবিন। কিন্তু সেখানেও তাঁকে তাড়া করে এলোপাথাড়ি মারধর চলতে থাকে। সেই সময় ঘটনাটি কয়েক জনের চোখে পড়ে। তাঁরাই পুলিশকে জানান।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের দেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সিসিক্যামেরার সূত্র ধরে এবং রাত্রি নিবাসের অন্যদের বয়ানের ভিত্তিতে গোপাল, সুশান্ত এবং অমিতকে পাকড়াও করে পুলিশ। গোপাল ওই রাত্রি নিবাসের কেয়ারটেকার।
আরও পড়ুন: করোনা আটকাতে এই সব নিয়ম পালন করছেন তো? নইলে বিপদের ঝুঁকি থাকছে
লকডাউনে চিকিৎসক অমিল, হাতের কাছে মজুত রাখুন এ সব
এর আগে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে কোরপান শাহ নামে এক যুবককে মোবাইল চোর সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হয়। সেই ঘটনাতে উঠে এসেছিল বেশ কিছু ডাক্তারি ছাত্র এবং জুনিয়র চিকিৎসকের নাম। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন।