প্রতীকী চিত্র
ফোনে এক পরিচিতকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, তাঁর কাছে টাকা রয়েছে। তখন বন্ধুদের আড্ডায় ছিলেন ঘোলা মুড়াগাছা নবপল্লির উমেশ মল্লিক (৩৮)। পরদিন, সরস্বতী পুজোর রাতে বন্ধুদের ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরোন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে জখম অবস্থায় পাওয়া যায়। রবিবার সকালে পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। অভিযোগ, সুদীপ সরকার এবং বাবু হালদার নামে উমেশের দুই বন্ধু তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। রবিবার উমেশের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছতে স্থানীয়েরা ওই দু’জনের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হয়েছে। দু’জনের খোঁজ চলছে।
উমেশের পরিবারের অভিযোগ, তাঁর কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা লুট করতেই খুন করা হয়েছে উমেশকে। উমেশের মোবাইলও উধাও। তাঁর মা উষা মল্লিকের অভিযোগ, ‘‘যে আড্ডায় ফোনে পরিচিতকে অর্থ সাহায্যের কথা বলেছিল উমেশ, সেখানেই ছিল সুদীপ ও বাবু।’’ উমেশ কর্নাটকের এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী। সম্প্রতি বাড়ি ফিরে অটো চালাচ্ছিলেন। মাসখানেক পরে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর।
স্থানীয় সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে উমেশের মোবাইলে একটি ফোন এসেছিল। অন্য প্রান্ত থেকে কেউ তাঁর সমস্যার কথা বলছিলেন। তখন সুদীপ তাঁকে বলেন, ‘‘আমার কাছে টাকা রাখা আছে। তোর কত চাই?’’ উমেশ মায়ের সঙ্গে থাকতেন। উষাদেবী জানান, সরস্বতী পুজোর রাতে নিজের ঘরে একা ছিলেন উমেশ। পাশের ঘরে ছিলেন তিনি। রাত ১২টা নাগাদ উমেশের মোবাইলে ফোন আসে। সে কাউকে বলে, ‘‘আমি আসছি। হ্যাঁ, সঙ্গে টাকা নিচ্ছি।’’
উষাদেবী জানান, ঘণ্টা দুয়েক পরে ছেলে ফিরেছেন কি না দেখতে যান। তাঁর ঘর বাইরে থেকে বন্ধ পেয়ে তিনি খুঁজতে বেরিয়ে দেখেন, অটো নিয়ে রাস্তার এ দিক-ও দিক যাচ্ছে সুদীপ। তার স্ত্রী বারবার ডাকলেও ভ্রুক্ষেপ না করে অটো নিয়ে চলে যায় সে।’’
পরদিন ভোরে ফের ছেলেকে খুঁজতে বার হয়ে তিনি এবং তাঁর মেয়ে শিল্পী দেখেন, রাস্তায় জখম অবস্থায় পড়ে উমেশ। মাথায় গভীর চোট ছিল তাঁর। শিল্পী বলেন, ‘‘কোনও রকমে বলে, সুদীপ ও বাবু মাথায় হাতুড়ি ও ইট দিয়ে থেঁতলে ২০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়েছে। এই বলে ও অজ্ঞান হয়ে যায়।’’
রবিবার সকালে উমেশের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাসিন্দারা অভিযুক্তদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামালায়। সুদীপের স্ত্রীকে থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা করা হচ্ছে।