Accident

Accident: সেতুর ট্রামলাইনে চাকা পড়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু

ক্ষিপ্ত এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাগমারি সেতুর ঢালে ট্রামলাইন থাকায় খুবই বিপজ্জনক জায়গাটি। ঢালের কিছু জায়গায় লাইন আর রাস্তার পিচ অসমান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:৪৩
Share:

থানা চত্বরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাইক। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।

সকাল থেকে হাল্কা বৃষ্টিতে রাস্তা পিচ্ছিল ছিল। তার মধ্যে ট্রামলাইনের কিছুটা অংশে রাস্তা অসমান হয়ে থাকায় আরও বিপজ্জনক হয়ে ছিল পরিস্থিতি। শুক্রবার সকাল ৮টা ২০ মিনিট নাগাদ মানিকতলা এলাকার বাগমারি সেতুর উপরে শান্তিনাথতলায় একটি মোটরবাইকের চাকা ট্রামলাইনের ওই অংশে পিছলে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ঠিক তখনই উল্টো দিক থেকে আসা একটি জেসিবি গাড়ির চাকা বাইকচালককে পিষে দেয়। আহত হয়েছেন ওই বাইকের অপর আরোহী।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুমন রানা (২৯)। তিনি অ্যাপ-বাইকের চালক ছিলেন। তাঁর পিছনে বসে ছিলেন যে যাত্রী, তাঁর নাম রবিনা জায়সওয়াল (২৫)। বাইপাসের ধারের
একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই তরুণী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, মোটরবাইকটি মানিকতলা থেকে কাঁকুড়গাছির দিকে যাওয়ার পথে বাগমারি সেতু দিয়ে উপরে উঠছিল। তখন হাল্কা বৃষ্টি হচ্ছিল। মোটরবাইকের চাকা কোনও ভাবে ট্রামলাইনে পিছলে যায়। ঠিক ওই সময়ে উল্টো দিক থেকে একটি জেসিবি গাড়ি আসছিল। তার সামনেই পড়েন সুমন। গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি। সেটির পিছনের চাকা পিষে দেয় সুমনকে। রবিনা পাশে পড়লেও একটুর জন্য বেঁচে যান। তাঁকে স্থানীয়েরা আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে পরিজনেরা তাঁকে বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, সুমনের বাড়ি হাওড়ায়। হাওড়া থেকেই রবিনাকে নিয়ে কাঁকুড়গাছিতে যাচ্ছিলেন। রবিনার বাবা রাকেশ জায়সওয়াল জানান, তাঁর মেয়ে কাঁকুড়গাছির একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ান। সেখানেই যাচ্ছিলেন রবিনা। রাকেশ বলেন, ‘‘মেয়ে যে ভাবে পড়েছে শুনেছি, তাতে শুধু এটুকুই বলতে পারি, অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছে।’’ রাকেশ জানান, তাঁদের বাড়ি তালতলায়। তবে বৃহস্পতিবার রাতে রবিনা হাওড়ার সালকিয়ার বাড়িতে ছিলেন।

Advertisement

দু’জনেই হেলমেট পরেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে আছে হেলমেট। রাস্তায় রক্তের দাগ। ক্ষিপ্ত এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাগমারি সেতুর ঢালে ট্রামলাইন থাকায় খুবই বিপজ্জনক জায়গাটি। ঢালের কিছু জায়গায় লাইন আর রাস্তার পিচ অসমান। তেমন জায়গায় বাইকের চাকা পড়েই এমন অঘটন। এ দিন দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা মানিকতলায় প্রায় এক ঘণ্টা পথ অবরোধ করেন। তাঁদের দাবি, ট্রামলাইনের জন্য বার বার দুর্ঘটনা ঘটছে বাগমারি সেতুতে। অথচ লাইন ঢাকা হচ্ছে না।

এক অবরোধকারী মনোজ চামারিয়া বলেন, ‘‘দশ দিনের মধ্যে ট্রামলাইন ঢাকা না হলে ফের অবরোধ করব। প্রতিদিনই মোটরবাইক উল্টে যাচ্ছে। আজ সেই জায়গাতেই এত বড় দুর্ঘটনা।’’ বাসিন্দা শঙ্করলাল সিংহ জানাচ্ছেন, প্রায় প্রতিদিনই বাগমারি সেতুর ঢালের এমন অংশে বাইকের চাকা পড়ে উল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই রাস্তা দিয়ে ট্রাম চলে না, অথচ লাইন পাতা। এই লাইন ঢেকে দেওয়ার জন্য বার বার বলেও কাজ হয় না। এই বিপজ্জনক জায়গায় ট্র্যাফিক পুলিশও সব সময়ে থাকে না। সিভিক পুলিশ আগে থাকত। তাদেরও কার্যত দেখা যায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement