Crime

নৃশংস ভাবে খুন, কংক্রিটের চাঙড়ের তলা থেকে উদ্ধার দেহ

পরিবার সূত্রের খবর, লক্ষ্মীকান্ত রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। শনিবার সন্ধ্যায় বন্ধু দিলীপ বিশ্বাসের সঙ্গে পাড়ায় ঘুরতে বেরিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২০ ০২:২৯
Share:

লক্ষ্মীকান্ত বিশ্বাস।

বাঁধানো রাস্তার উপরে পড়েছিল কংক্রিটের বড় চাঙড়টি। তার নীচেই একটি থেঁতলানো দেহ। রবিবার ভোরে এলাকার এক যুবকের এমন দশা দেখে শিউরে উঠেছিলেন বিলকান্দার যোগেন্দ্রনগরের বাসিন্দারা। ঘোলা থানার পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি স্থানীয় বাসিন্দা লক্ষ্মীকান্ত বিশ্বাসের (৩০)। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে।

Advertisement

পুলিশের ধারণা, লক্ষ্মীকান্তকে খুন করা হয়েছে। আপাত নিরীহ ওই যুবককে কে এ ভাবে খুন করল, তা ভেবে পাচ্ছেন না এলাকার বাসিন্দারা। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, কোনও শত্রু ছিল না লক্ষ্মীকান্তের। থানায় খুনেরই অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা। যে কায়দায় ওই যুবককে খুন করা হয়েছে, তাতে অনেকেই স্টোনম্যানের ছায়া খুঁজে পাচ্ছেন। চরম শত্রুতা ছাড়া খুনের ঘটনায় এমন নৃশংসতা দেখা যায় না বলেই মনে করছেন পুলিশকর্তারা।

পরিবার সূত্রের খবর, লক্ষ্মীকান্ত রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। শনিবার সন্ধ্যায় বন্ধু দিলীপ বিশ্বাসের সঙ্গে পাড়ায় ঘুরতে বেরিয়েছিলেন তিনি। পরে রাতে দিলীপ বাড়ি ফিরে যান। লক্ষ্মীকান্ত দিদির বাড়ি যাবেন বলে বন্ধুকে জানিয়েছিলেন। রাত ন’টা নাগাদ এলাকাতেই দিদির বাড়িতে যান তিনি। বেশি রাতের দিকে সেখান থেকে বাড়ির দিকে রওনা হন। কিন্তু তিনি বাড়ি ফেরেননি। লক্ষ্মীকান্তের দাদা নীহার বিশ্বাস জানান, তাঁরা ভেবেছিলেন দিদির বাড়িতেই রাতে রয়ে গিয়েছেন ভাই। মাঝেমধ্যেই তেমনটা করতেন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ, ফের সৌমিত্রের শারীরিক অবস্থার অবনতি​

রবিবার ভোরের দিকেই শোরগোল শুরু হয়ে যায় যোগেন্দ্রনগরে। পাড়ার মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছে একটি কংক্রিটের রাস্তা। তার দু’দিকে বাড়ি রয়েছে। সেই রাস্তার এক ধারে একটি কংক্রিটের বড় চাঙড় পড়ে থাকতে দেখেন এলাকার বাসিন্দারা। চাঙড়ের তলা থেকে দু’টি পা বেরিয়ে ছিল। আশপাশে পড়ে ছিল জমাট বাঁধা রক্ত। চাঙড়টি তুলতেই দেখা যায়, নীচে রয়েছে একটি রক্তাক্ত দেহ। তাঁর মুখটি থেঁতলানো ছিল। তবে পাড়ার ছেলেকে চিনতে পেরে চমকে ওঠেন এলাকার বাসিন্দারা।

নীহারবাবু বলেন, “মাঝেমধ্যে নেশা করলেও আর দোষ ছিল না ভাইয়ের। এলাকার সকলেই ওকে ভালবাসতেন। কারও সঙ্গে ওর আজ পর্যন্ত বচসা হতে দেখিনি। কারও সঙ্গে শত্রুতা ছিল বলেও জানি না। ফলে ওকে কে, কেন খুন করল, বুঝে উঠতে পারছি না। আমরা নিশ্চিত, ও কোনও অন্যায় করেনি।”

তা হলে কেন খুন? ধন্দে পড়েছে পুলিশও। যেখানে লক্ষ্মীকান্তের দেহ পড়ে ছিল, সেখানেই যদি তাঁকে খুন করা হয়ে থাকে, তা হলে আশপাশের বাড়ির লোকেরা চিৎকার শুনতে পেতেন। তাঁর মাথায় এবং ঘাড়ের দিকে ক্ষতচিহ্নও রয়েছে।

আরও পড়ুন: লোকসভার ক্ষত সারাতে নদিয়ায় কোমর বাঁধছেন মহুয়ারা​

পুলিশ মনে করছে, অন্য কোথাও খুন করে দেহটি পাড়ার মাঝে এনে রাস্তায় চাঙড় চাপা দিয়ে ফেলে রাখা হয়। খুনে একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকার সম্ভাবনার বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত। পুলিশ জানিয়েছে, সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলে খুনের বিষয়টি অনেকটা পরিষ্কার হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement