গোলাম আলি মোল্লা
সাইকেল চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগে দুই মহিলা-সহ চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সাউথ গড়িয়ার ঘটনা। জায়গাটি বারুইপুর থানা এলাকার মধ্যে। মৃতের নাম গোলাম আলি মোল্লা (২৭)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই রাতে গৌতম বিশ্বাস ও শম্ভু হালদার নামে স্থানীয় দুই যুবক গোলামকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। তার পরে সাইকেল চুরির অভিযোগ তুলে তাকে বেধড়ক মারধর করে। গৌতমের বাবা গোবিন্দ, মা তপতী ও বোন পূজাও গোলামকে মারধর করে বলে অভিযোগ।
গোলামের স্ত্রী লুচিমণি মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার স্বামীকে যখন গৌতম ডেকে নিয়ে গেল, আমরাও পিছু পিছু ওর বাড়ি গিয়েছিলাম। তখনও আমার স্বামীকে মারধর করা হচ্ছিল। আমরা গৌতমের পা ধরে কাকুতি-মিনতি করি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’’
গোলামকে বারুইপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান, পথেই মৃত্যু হয়েছে তার। পুলিশ জানায়, গোলামের মাথায় ও শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। মাথায় রক্তক্ষরণের কারণেই মৃত্যু হয়েছে গোলামের।
স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় বিষয়টি জানানোর পরে বৃহস্পতিবার রাতেই গৌতমের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। গৌতম, তার মা তপতী ও বোন পূজাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হয় গৌতমদের প্রতিবেশী শম্ভুও। তবে গৌতমের বাবা গোবিন্দ ফেরার।
কিন্তু এমন ঘটনা ঘটল কেন?
পুলিশ জানায়, দিন কয়েক আগে গৌতমের সাইকেল চুরি যায়। সোনারপুর ও বারুইপুর থানায় বেশ কয়েকটি চুরির অভিযোগ আছে গোলামের বিরুদ্ধে। এক সময়ে সে গ্রেফতারও হয়েছিল। পরে জামিন পায়। সে কারণেই গৌতমের সাইকেল চুরিতে গোলামই জড়িত, এই সন্দেহে তাকে মারধর করা হয়।
কিন্তু সত্যিই কি গৌতমের সাইকেল চুরি করেছিল গোলাম? পুলিশের একটি সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। কারণ, গোলামের বাড়ি বা তার আশপাশ থেকে গৌতমের সাইকেলটি এখনও উদ্ধার হয়নি। তবে পুলিশের দাবি, গৌতম জেরায় দাবি করেছে, তিন দিন আগে সাইকেল চুরি করার পরে বৃহস্পতিবার রাতেও গোলাম তার বাড়িতে হানা দিয়ে ঘরের মধ্যে থেকে জিনিস নেওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু গৌতম ও তার বাড়ির লোকজন টের পেয়ে যাওয়ায় গোলাম পালায়। তার পরে গোলামের বাড়িতে গিয়ে তাকে ডেকে আনা হয়।
এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘যদি ওই ঘটনা সত্যি বলে ধরেও নেওয়া হয়, তা হলেও আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। আমরা গৌতমের বাবার খোঁজ করছি।’’