প্রতীকী ছবি।
পার্কিং লট থেকে তোলা তুলতে এসে সেখানকার এক কর্মীকে বেধড়ক মারধর করে দু’লক্ষেরও বেশি টাকা লুট করল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার দিনেদুপুরে এই ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের অন্যতম সুরক্ষিত এলাকা বলে পরিচিত হাওড়া স্টেশনের ঠিক বাইরে। মারের চোটে গুরুতর জখম পার্কিংয়ের ওই কর্মীকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া স্টেশনের নিউ কমপ্লেক্সের উল্টো দিকে গঙ্গার পাড় বরাবর অংশে তৈরি হয়েছে পার্কিং লট। কয়েকটি বেসরকারি সংস্থাকে সেই পার্কিং লট চালানোর বরাত দিয়েছে পূর্ব রেল। ওই পার্কিং লটের একাংশের বরাত পেয়েছে সালকিয়ার একটি সংস্থা। গত ১৬ জানুয়ারি থেকে সেখানে পার্কিং ফি নিতে শুরু করেছে তারা। ওই সংস্থার অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে সাত-আট জন দুষ্কৃতী মত্ত অবস্থায় এসে পার্কিংয়ের কর্মীদের কাছে তোলা দাবি করে। কিন্তু কর্মীরা টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় গালিগালাজ করে চলে যায় তারা। এর পরে শুক্রবার দুপুরে ৩০-৪০ জন দুষ্কৃতী লাঠি, রড নিয়ে ওই পার্কিং লটে এসে ফের তোলা দাবি করে। এ বারও টাকা না মেলায় পার্কিং লটে ভাঙচুর শুরু করে তারা। ওই সময়ে ক্যাশ কাউন্টারে বসে ছিলেন রোহিত সিংহ নামে এক কর্মী। তিনি বাধা দিতে যাওয়ায় তাঁকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই যুবককে পরে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রীতেশ পাণ্ডে নামে ওই পার্কিং লটের এক অংশীদার এ দিন বলেন, ‘‘ওরা কাল রাতে এসে টাকা চেয়েছিল। আজও এসে ফের টাকা চায়। না পাওয়ায় আমাদেরই প্রতিদ্বন্দ্বী একটি সংস্থার লোকজনকে নিয়ে এসে হামলা চালায়। ভাঙচুর ও মারধর করে। আজই ব্যাঙ্কে জমা দেওয়ার জন্য দু’লক্ষ ৩০ হাজার টাকা রাখা ছিল ড্রয়ারে। সেটা ছিনতাই করে পালায় ওরা।’’
এই ঘটনার পরে উত্তেজনা ছড়ায় হাওড়া স্টেশন চত্বরে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে হাওড়া স্টেশন ট্র্যাফিক গার্ড ও গোলাবাড়ি থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, পার্কিং লটের দিকে কোনও সিসি ক্যামেরা না থাকায় হামলার কোনও ফুটেজ পাওয়া সম্ভব নয়। তবে অন্য জায়গায় বসানো ক্যামেরার ছবি দেখে হামলাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, অন্য একটি পার্কিং সংস্থার সঙ্গে এই সংস্থাটির ঝামেলা চলছিল। হামলার ঘটনার সঙ্গে সেই ঝামেলার কোনও যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার কুণাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। ঠিক কী ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’