—প্রতীকী চিত্র।
এ যেন বার বার করে একই কুমিরছানাকে দেখানোর সেই
পুরনো গল্প!
একটি সম্পত্তিকেই বিভিন্ন নামে দেখিয়ে এবং তা একাধিক বার বিভিন্ন ব্যাঙ্কে বন্ধক রেখে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জালিয়াতদের একটি চক্র।
ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার নাম করে ভুয়ো নথি দেখিয়ে টাকা হাতানোর অভিযোগে ওই প্রতারণা-চক্রের এক পাণ্ডাকে জেল থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছেন এন্টালি থানার তদন্তকারী অফিসারেরা। প্রতারণারই অন্য একটি মামলায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবড়া থানার পুলিশ গত ১৪ জুন গ্রেফতার করেছিল ওই অভিযুক্তকে। তার পর থেকে সে দমদম জেলেই ছিল। বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ আদালতের নির্দেশে তাকে বিচারকের সামনে হাজির করানো হয়। আদালতের সরকার পক্ষের কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী জানান, বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে কোটি কোটি টাকা জালিয়াতির ঘটনায় ধরা
পড়া ওই অভিযুক্তের নাম রাজদীপ রায়। তাকে আগামী ১৭ অগস্ট
পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, হাবড়ার বাসিন্দা ওই অভিযুক্ত ২০১৭ সালে এন্টালি এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ‘ক্যাশ ক্রেডিট’ ঋণ নিয়েছিল, হাবড়ারই একটি রাইস মিলকে ব্যাঙ্কে বন্ধক হিসেবে রেখে। এর পরে যথাসময়ে ঋণের মাসিক কিস্তি জমা না-পড়ায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, যে সংস্থার নামে ঋণ নেওয়া হয়েছে, সেটি পুরোপুরি ভুয়ো। তার পরে দেখা যায়, ওই ব্যক্তির জমা দেওয়া প্রতিটি নথিই ভুয়ো। প্যান কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো যে সব নথি জমা দিয়ে সে ঋণ নিয়েছিল, কোনওটি আসল নয়।
এক তদন্তকারী অফিসার জানান, প্রথমে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নিজেরাই তদন্ত করে জানতে পারেন, রাইস মিলের নাম বদলে সেটি আরও কয়েকটি ব্যাঙ্কে বন্ধক রেখে বহু টাকা ঋণ নিয়েছে ওই প্রতারক। ওই ব্যাঙ্ক আইন মোতাবেক মিলটি বাজেয়াপ্ত করার আবেদন জানায়। ২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর এন্টালি
থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যাঙ্কের কর্তারা।
পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, অভিযুক্ত পালিয়েছে। তার জমা দেওয়া সমস্ত নথি ভুয়ো হওয়ায় রাজদীপের খোঁজ পেতে দেরি হয়। মাসখানেক আগে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, হাবড়া থানা প্রতারণার অভিযোগে রাজদীপকে গ্রেফতার করেছে। সে জেলে রয়েছে। এর পরেই আদালতে আবেদন জানিয়ে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়া হয় বলে দাবি পুলিশের।
এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ধৃতের সঙ্গে তার এক সঙ্গীও রয়েছে ওই প্রতারণা-চক্রে। রাজদীপের স্ত্রী-ও ওই চক্রে জড়িত বলেই সন্দেহ তদন্তকারী অফিসারদের। ওই
চক্রটি একই কায়দায় আরও কয়েকটি ব্যাঙ্কের থেকে ঋণ নিয়ে প্রতারণা করেছে বলে দাবি পুলিশের।
এ বিষয়ে আরও বিশদে জানার
চেষ্টা হচ্ছে।