জল বাঁচানোর বার্তা নিয়ে পথে মুখ্যমন্ত্রী

তবে এ দিন পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের নজর ছিল মিছিলের পথে থাকা মুরলীধর লেনের ভারতীয় জনতা পার্টির দফতরের গলি। যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তাই সেখানে ব্যারিকেড করে পুলিশের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯ ০২:২০
Share:

সচেতনতায়: জল অপচয় বন্ধের আর্জি নিয়ে মিছিলে হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় জলসঙ্কট ইতিমধ্যেই তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ দেশেও জলের অভাবে নাজেহাল চেন্নাইয়ের মতো শহর। তবে পশ্চিমবঙ্গে এখনও তার আঁচ পড়েনি। জল অপচয় বন্ধের জন্য তাই আগাম সতর্কবার্তা নিয়েই শুক্রবার রাস্তায় নামলেন স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও রকম রাজনৈতিক স্লোগান বা দলীয় পতাকা ছাড়া চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের উপরে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির গেট থেকে ‘জল বাঁচান, জীবন বাঁচান’ বার্তা দেওয়া নীল ফেট্টি জড়িয়ে মিছিল শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন একাধিক মন্ত্রী, শীর্ষ স্তরের আমলা এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

Advertisement

আর ছিলেন ছিয়াত্তর বছরের ‘যুবক’ বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায়। মিছিলের একেবারে সামনে হেঁটে তিনি পৌঁছেছেন জোড়াসাঁকো থেকে মেয়ো রোড। আর্দ্র-অস্বস্তিকর আবহাওয়াতেও সপসপে ঘেমে গোটা রাস্তায় পা মিলিয়েছেন তিনি। শুধু জল বাঁচানোর বার্তা নিয়ে এই বয়সে হাঁটা? প্রশ্ন শুনে বিশ্বরূপবাবুর উত্তর, ‘‘সে তো রয়েছে। তবে আমি মুখ্যমন্ত্রীর ওয়ার্ডে থাকি। ওঁকে ভালবাসি, শ্রদ্ধা করি। তাই এসেছি।’’ আবার মিছিলে এসেছিলেন অনেক অরাজনৈতিক মানুষও। ছিল একাধিক স্কুলের পড়ুয়ারাও। তাদের হাতে ছোট ছোট প্ল্যাকার্ডে লেখা সেই একই স্লোগান—‘জল বাঁচান, জীবন বাঁচান।’ তবে শুধু হাতে প্ল্যাকার্ড নয়। রাস্তার দু’ধারে সারি সারি হোর্ডিং। কোনওটায় লেখা ‘জল না হলে জীবন মরুভূমি’, কোনওটাতে লেখা ‘বৃষ্টির জল ধরে রাখুন’।

তবে এ দিন পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের নজর ছিল মিছিলের পথে থাকা মুরলীধর লেনের ভারতীয় জনতা পার্টির দফতরের গলি। যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তাই সেখানে ব্যারিকেড করে পুলিশের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। কোনও কিছু ঘটলে তার প্রমাণ ক্যামেরায় ধরে রাখতেও প্রস্তুত ছিলেন পুলিশকর্মীরা। তবে এ দিন তেমন কিছু না ঘটায় হাঁফ ছেড়েছেন পুলিশকর্তারা। নির্বিঘ্নে মিছিল মহাত্মা গাঁধী রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ পেরিয়ে এগিয়ে গিয়েছে। আর এরই মাঝে ধর্মতলা ডোরিনা ক্রসিংয়ের পরেই আবার দেখা গিয়েছে একটি সুন্দর মুহূর্ত। ছোট্ট মেয়ে বাবার কাঁধে চড়ে অপেক্ষা করছিল মিছিলের জন্য। মিছিল সামনে আসতেই বাবার কাঁধ থেকে নেমে সে ছুট দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে। হাতে রজনীগন্ধার একটি মালা। সেটি মুখ্যমন্ত্রীর গলায় পরাতে চেয়েছিল সে। মুখ্যমন্ত্রীও সেই ছোট্ট শিশুর কাছে গিয়ে মালাটি নিয়ে তারই গলায় পরিয়ে আদর করে দিয়ে ফের হাঁটা দেন পার্ক স্ট্রিটের দিকে। সেখান থেকে মিছিল ঘুরে চলে যায় গাঁধী মূর্তির পাদদেশে। পরে সেখানে জল সংরক্ষণ নিয়ে বক্তৃতা শেষ করে স্কুলপড়ুয়াদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা—‘‘সবাই খাবারের প্যাকেট পেয়েছ তো? না পেলে আমায় পরে চিঠি দিয়ে জানিও।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement