Mahalaya

ঘাটের দূরত্ব-বিধি আজ কি তবে ঘোষণায় আটকে

প্রতিটি ঘাটে একটি করে শিবির থাকছে। সেখান থেকেই পুলিশের তরফে বিনামূল্যে স্যানিটাইজ়ার দেওয়ার কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৪২
Share:

প্রস্তুতি: তর্পণের আগে পরিষ্কার করা হচ্ছে বাবুঘাট চত্বর। (পাশে) বিশ্বকর্মা পুজো এবং তর্পণ উপলক্ষে মল্লিকঘাটের ফুলবাজারে ভিড়। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক, দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

আজ মহালয়া। ঘাটে ঘাটে তর্পণের চেনা ভিড়ে কী ভাবে মানা হবে করোনা সুরক্ষায় দূরত্ব-বিধি? বুধবার শহরের বিভিন্ন ঘাটের ব্যবস্থাপনা ঘুরে দেখার পরে অন্তত সেই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে। যদিও কলকাতা পুরসভার দাবি, দূরত্ব-বিধির কথা মনে করিয়ে দিতে সেখানে থাকছে লাগাতার ঘোষণার ব্যবস্থা। অন্ধকার থাকতেই শুরু হয়ে যায় তর্পণ, তাই প্রতি বারের মতোই গঙ্গার ঘাটে ব্যবস্থা করা হয়েছে আলোর। পরিষ্কার করা হয়েছে ঘাটগুলি।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, কলকাতা পুলিশের সঙ্গে এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। বাবুঘাট, নিমতলা ঘাট ও জাজেস ঘাট-সহ শহরের ন’টি ঘাট পরিষ্কার হয়েছে। প্রতিটি ঘাটে একটি করে শিবির থাকছে। সেখান থেকেই পুলিশের তরফে বিনামূল্যে স্যানিটাইজ়ার দেওয়ার কথা।

যদিও এ দিন দুপুর থেকে নিমতলা, মল্লিকঘাট এবং বাবুঘাটে ঘুরে কোনও শিবিরের কাঠামোই চোখে পড়েনি। এমনকি স্টেশনে বা রাস্তায় যে ভাবে বৃত্তাকার দাগ কেটে দূরত্ব-বিধি মানার ব্যবস্থা করা হয়, গঙ্গার ঘাটগুলিতে এ দিন তেমন কিছুই দেখা যায়নি। বিনামূল্যে স্যানিটাইজ়ার দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েও বিভ্রান্ত পুলিশের বড় অংশ। নিমতলা, শোভাবাজার, বাগবাজারের ঘাটগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি থানার প্রধান পুলিশ আধিকারিক বললেন, “স্যানিটাইজ়ার দেওয়ার কোনও নির্দেশ আসেনি। শিবির করার কথাও জানি না। তবে ভোর থেকে দূরত্ব মানার কথা বার বার ঘোষণা করব।”

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘মহালয়া’র টানে মিলে যাবে দেশ-বিদেশ

এ দিন দেখা গেল, জাজেস ঘাটের সিঁড়ি থেকে জলের মধ্যে কিছুটা দূরে বাঁশ পুঁতে জাল লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঘাটে দূরত্ব বজায় রাখার কোনও ব্যবস্থাই নেই!

নিমতলায় তর্পণের বন্দোবস্ত বলতে ঘাট সংলগ্ন জায়গায় এক ধারে পাঁচ-ছ’টি গার্ডরেল দাঁড় করানো আছে। সেখানেই প্রাত্যহিক আড্ডায় ব্যস্ত কয়েক জন। এক জন বললেন, “এই তো ব্যবস্থা! লোকে ঘোষণা শুনেই যদি দূরে থাকত, তা হলে বাজারের ভিড় নিয়ে প্রশাসনকে সমস্যায় পড়তে হত না।” পাশে বসা অন্য জন বললেন, “শুনছি, যিনি তর্পণ করতে আসবেন তাঁকে ও পুরোহিতকে মাস্ক পরে থাকতে হবে। কিন্তু মাস্ক থুতনিতে নেমে এলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?”

আরও পড়ুন: আগমনি দূর অস্ত্, মহালয়াতেও প্রতিমা রংহীন

কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকারের বক্তব্য, “সব রকম পুলিশি বন্দোবস্ত রাখা হচ্ছে ঘাটগুলিতে। অন্য বারের থেকেও বেশি নজরদারি চলবে।” লালবাজার সূত্রের খবর, বাড়তি পুলিশবাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি রিভার ট্র্যাফিক পুলিশকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। মোতায়েন রাখা হচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বিশেষ দলও। ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি চালানো হতে পারে। জোয়ারের সময়ে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, তাই ঘাট থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে টহল দেওয়ার কথা রিভার ট্র্যাফিক বোটের। নির্দিষ্ট সময় অন্তর বাঁশি বাজিয়ে তর্পণকারীদের সতর্ক করা হবে সেখান থেকেও।

তবে মহালয়া নিয়ে অতিরিক্ত কড়াকড়ি চাইছে না পুর প্রশাসন। অনুরোধের মাধ্যমে বিধি মানানোর প্রক্রিয়া কার্যকর করাই তাদের লক্ষ্য। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য দেবাশিস কুমার এ দিন বলেন, “করোনার জন্য বাড়তি সতর্কতা নিতে তো হবেই। তবে অন্যান্য বার ব্যবস্থা যেমন থাকে, তেমনই থাকছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement