এমনই বেহাল দশা বিধাননগরের বেশ কিছু জলসত্রের। নিজস্ব চিত্র
ব্যস্ত রাস্তার মোড়ে বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে যন্ত্রগুলি। কল থেকে জল পড়ে না। ধুলোয় ভরে গিয়েছে প্রতিটি জলসত্র। কোথাও আবার জলসত্রের ভিতরেই রাখা হচ্ছে ব্যবসার জিনিসপত্র। বিধাননগর পুরসভার অধীনস্থ সল্টলেক ও বাগুইআটি এলাকার প্রায় প্রতিটি জলসত্রই বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে বহুদিন ধরে।
গরম পড়তেই রাস্তায় বেরিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। এক সময়ে ওই সব জলসত্র চালু করা হয়েছিল পথচারী ও গাড়িচালকদের মতো মানুষের কথা ভেবে। রাস্তায় চলতে চলতে বহু গাড়িচালক ওই সব জলসত্র থেকে জল ভরে নিতেন। বিভিন্ন সংস্থাকে দিয়ে ওই সব জলসত্র তৈরি করিয়ে ঘটা করে সেগুলির উদ্বোধনও করেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু তার পরে নীরবে সেই সব জলসত্র অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।
সল্টলেকের সিটি সেন্টারের কাছে, কেষ্টপুর সাবওয়ের কাছে,
বাগুইআটি মোড়ে, জোড়ামন্দির এলাকায় ওই জলসত্রগুলি বসানো হয়েছিল। পূর্ত দফতর জানাচ্ছে, তাদের রাস্তার উপরে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ওই জলসত্রগুলি বসিয়েছিল। বিধাননগর পুরসভা যার অনুমতি দিয়েছিল। করোনার আগে পর্যন্ত সেগুলিতে জল পাওয়া যেত। কিন্তু শেষ দু’বছরে ওই সব জলসত্র অকেজো হয়ে গিয়েছে। কেষ্টপুর সাবওয়ের কাছে গিয়ে দেখা গেল, এমনই একটি জলসত্র ব্যাগ প্রদর্শনের জায়গা হয়েছে এক হকারের। তিনি জানালেন, বহু দিন ধরেই জলসত্রটি শুকনো হয়ে পড়ে রয়েছে। আবার বাগুইআটি মোড়ে জলসত্রটির পিছনে লটারির দোকান বসে থাকতে দেখা গেল।
সূত্রের খবর, ওই সব জলসত্রের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সেগুলির উপরে বিজ্ঞাপন দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়। যাতে জলসত্র যারা বসাচ্ছে, বিজ্ঞাপনের টাকায় তারা সেটির রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে। কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞাপন থাকলেও জলসত্রগুলি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এলাকার লোকজনের মতে, ওই সমস্ত জলসত্রে পাম্পের মাধ্যমে জল ভরার ব্যবস্থা রাখা উচিত ছিল। কিন্তু তার বদলে ট্যাঙ্কার এনে সেগুলিতে জল ভরা হত। করোনার সময়ে লোকের অভাবে আর ওই কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি বলেই দাবি স্থানীয়দের।
এক সময়ে রাজারহাট-গোপালপুরের বিধায়ক ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। বাগুইআটি এলাকায় বেশ কিছু জলসত্র তাঁর উদ্যোগেই বসেছিল। তিনি বলেন, ‘‘এলাকার মানুষের চাহিদা অনুযায়ী ওই জলসত্রগুলি বসানো হয়েছিল। বর্তমানে ওখানে যাঁরা দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই বিষয়টি নিয়ে সচেতন।’’
বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী অবশ্য জানান, তিনি সমস্যা সম্পর্কে অবগত। তিনি জানান, শুধুই রাজারহাট-গোপালপুর এলাকা নয়, সল্টলেকেও অনেক জায়গায় জলসত্র অকেজো হয়ে গিয়েছে। কৃষ্ণা বলেন, ‘‘করোনার সময়ে রাস্তায় কেউ জল খেতে চাইতেন না। সেই কারণে ওই জলসত্রগুলি ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। গরমও পড়ছে। ওই সব জলসত্রগুলি ফের চালু করে দেওয়া হবে।’’