প্রতীকী চিত্র।
জ্বর, ঠান্ডা লাগা, পেটের গোলমাল, ক্লান্তির মতো উপসর্গগুলোই সহজে বোঝাতে পারেন না তাঁরা। ফলে কোভিড হলে পাঁচ জনের তুলনায় বেশি ভোগান্তি তাঁদের।
এই মানুষগুলোর যত্ন বা চিকিৎসার কথা ভেবেই সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে মনোরোগীদের জন্য কোভিড ওয়ার্ড গড়ে উঠেছে কলকাতার লুম্বিনী পার্ক মানসিক হাসপাতালে। কিন্তু তৈরির মাসখানেকের মধ্যেই স্বাস্থ্য সহায়কের অভাবে রোগীদের পরিচর্যা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। যা নিয়ে স্বাস্থ্য কর্তাদের দ্বারস্থ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ২০ জন পুরুষ ও ১৫ জন মহিলার জন্য তৈরি কোভিড ওয়ার্ডে আবাসিকদের র্যাপিড অ্যান্টিজেন এবং রক্তের নানা পরীক্ষা, অক্সিজেনের বন্দোবস্ত— সবই আছে। কিন্তু ঘড়ি ধরে কোভিড রোগীর শারীরিক অবস্থা জরিপ এবং তা নথিবদ্ধ করা, তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া, দরকারে যন্ত্রের মাধ্যমে রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা করায় সকলে দক্ষ নন। ফলে সব নার্সকে নিয়োগ করা যায় না। হাসপাতালের এক কর্তা বলছেন, “কোভিড রোগীর নানা পরীক্ষার সরঞ্জাম, অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর নিয়ে আসা হয়েছে। সুপারের তত্ত্বাবধানেই নির্দিষ্ট টিম কোভিড রোগীদের দেখভাল করছিল। রোগীর জটিলতা দেখা না-দিলে তাঁকে অন্য হাসপাতালে সরানোর ইচ্ছে ছিল না। এমন অবস্থায় হঠাৎই ওই নার্সদের বদলির নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। ফলে, রোগীদের তদারকিতে সমস্যা হচ্ছে।” তিনি জানাচ্ছেন, তিন জন পুরুষ নার্সকে রাজারহাটের এক কোভিড হাসপাতালে সরানো হয়েছে। হাসপাতালটির রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় বিধায়ক এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তার সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য ভবনের আশ্বাস পেয়েছি। দু’চার দিনেই সমস্যা মিটবে।” স্বাস্থ্য ভবনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “হাসপাতালের কাজে ক্ষতি না-করেই নিষ্পত্তি হবে।”
যদিও সরকারি মানসিক হাসপাতালের আবাসিকদের কোভিড হলে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা হয়। তবে লুম্বিনীর কোভিড ওয়ার্ড থেকে এখনও পর্যন্ত ২০ জন পুরুষ রোগী সুস্থ হয়েছেন। আরও তিন জন চিকিৎসাধীন। এমনকি পাভলভ বা অন্য মানসিক হাসপাতালের আবাসিকদের কোভিড হলেও চিকিৎসা করাতে আগ্রহী লুম্বিনী।
এই পরিস্থিতি তৈরির জন্য হাসপাতালের একটি সূত্র অবশ্য দায়ী করছে নার্সিং সুপারকে। দাবি, সুপার কোভিড ওয়ার্ডের জন্য নার্স বাছাই করলে তা মনঃপুত হয়নি নার্সিং সুপারের। তাই তিনি স্বাস্থ্য ভবনের দ্বারস্থ হন। নার্সিং সুপার ছবি মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “যা বলার সুপার বলবেন।” আর সুপার বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “হাসপাতালের কাজ যাতে সুষ্ঠু ভাবে চলে সেটা দেখাই আমাদের লক্ষ্য। আর কিছু বলার নেই।”