Coronavirus Lockdown

তলানিতে আয়, বেতন দিতে ঘাম ছুটছে পুরসভার

সম্পত্তি কর, লাইসেন্স ফি, নির্মাণের অনুমোদনের ফি বাবদ পাওয়া টাকাই আয়ের প্রধান উৎস পুরসভার।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০২:৫৮
Share:

ফাইল চিত্র।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে বলবৎ হওয়া লকডাউন চরম আর্থিক সঙ্কটে ফেলে দিয়েছে কলকাতা পুরসভাকেও। জুন মাসের পয়লা তারিখে কর্মীরা বেতন পেয়ে গেলেও ২ জুন, মঙ্গলবারও পেনশন পাননি অবসরপ্রাপ্তদের অনেকেই।

Advertisement

সম্পত্তি কর, লাইসেন্স ফি, নির্মাণের অনুমোদনের ফি বাবদ পাওয়া টাকাই আয়ের প্রধান উৎস পুরসভার। প্রতি বছর প্রথম ত্রৈমাসিকে পুর কর বাবদ তাদের আয় হয় ২৬০ থেকে ২৭০ কোটি টাকা। এ বছর ওই সময়ে আয় হয়েছে মাত্র ৪০ কোটি টাকা। আর তাতেই কর্মীদের বেতন বা পেনশন দিতে হিমশিম অবস্থা পুর প্রশাসনের। সাধারণত, মাসের প্রথম দিনেই পেনশন ঢুকে যায় অ্যাকাউন্টে। এ বার দ্বিতীয় দিনেও ঢোকেনি। পুরসভার সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রের খবর, আর্থিক সঙ্কটই এর প্রধান কারণ। যা অতীতে কখনও হয়নি।

প্রতি মাসে স্থায়ী কর্মীদের বেতন দিতে ৮০ কোটি, অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দিতে ৩০ কোটি এবং পেনশন বাবদ ৫০ কোটি টাকা খরচ হয় কলকাতা পুরসভার। সব মিলিয়ে মাসে ১৬০ কোটি। এর মধ্যে স্থায়ী কর্মীদের বেতনের অর্ধেক, অর্থাৎ ৪০ কোটি টাকা এবং পেনশনের ৪০ শতাংশ, অর্থাৎ ২০ কোটি-সহ মোট ৬০ কোটি টাকা রাজ্য সরকার প্রতি মাসে পুরসভাকে দেয়। বাকি ১০০ কোটি টাকা আসে কর আদায়ের রোজগার থেকে। এ বার লকডাউনে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল কর জমা নেওয়ার কাউন্টার। অনলাইনে দেওয়ার আবেদন জানানো হলেও সে ভাবে সাড়া মেলেনি। প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য এবং ওই দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতীন ঘোষ জানান, আদায় খুবই কম হয়েছে।

Advertisement

পুরসভার বিল্ডিং দফতর বছরে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা আয় করে। মূলত নির্মাণের অনুমোদন ও জরিমানা থেকে। এ বার তা হয়নি। দফতরের এক আধিকারিক জানান, অনুমোদন দেওয়ার আগে আবেদনকারীর কাছে ‘ডিমান্ড নোটিস’ পাঠানো হয়। গত দু’তিন মাসে কেউ ডিমান্ড নিতে আগ্রহ দেখাননি। লাইসেন্স ফি বাবদ বছরে ৫০ কোটির মতো আদায় হয়। এ বার প্রথম তিন মাসে সেই ভাঁড়ারেও টান।

এর উপরে রয়েছে করোনা। গত দু’মাসে স্রেফ করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্যই বাড়তি প্রায় ১৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে পুরসভার। এক অফিসার জানান, আগের জমানো টাকা গত দু’মাসে বেতন ও পেনশন দিতে গিয়েই শেষ হওয়ার মুখে। জুন মাসের পরে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা নিয়ে এখন থেকেই আশঙ্কা বাড়ছে। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই কর আদায়ের সমস্ত কাউন্টার চালু করতে বলা হয়েছে। তবে চেয়ারম্যান নিজেই রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী হওয়ায় সরকারি সহায়তা অগ্রিম পাওয়া নিয়ে কিছুটা আশাবাদী পুরসভা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement