ছবি সংগৃহীত
করোনা সংক্রমণ রুখতে সপ্তাহে দু’দিন পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এ ছাড়া বিভিন্ন পুর এলাকাতেও চলছে লকডাউন। এ বার সংক্রমণ রুখতে আগামী ১১ অগস্ট, লোকনাথের জন্মতিথি উপলক্ষে যাবতীয় অনুষ্ঠান এবং মেলা বন্ধ করে দিল লোকনাথ মিশন। মঙ্গলবার ওই সংস্থার তরফে ভক্তদের কাছে এক আবেদনে লোকনাথ ধামে জমায়েত না করে বাড়িতেই জন্মোৎসব পালনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা থানার চাকলা এবং বসিরহাটের মাটিয়া থানার কচুয়ায় লোকনাথের দু’টি মন্দির ও আশ্রম রয়েছে। জন্মাষ্টমীর দিন ওই দুই জায়গায় মহা সমারোহে লোকনাথ উৎসব পালন করা হয়। প্রতি বছর পায়ে হেঁটে সেই উৎসবে শামিল হন লক্ষাধিক মানুষ। মন্দির প্রাঙ্গণে এ উপলক্ষে বিশাল মেলাও বসে।
কিন্তু গত বছর এই উৎসবের দিনেই কচুয়া লোকনাথ ধামে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটেছিল। রাতভর বৃষ্টিতে সেখানকার প্রবেশপথের এক পাশের পাঁচিল ভেঙে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুকুরে পড়ে গিয়ে এবং পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ছ’জন ভক্তের। এ বছর তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল প্রশাসন। দুঘর্টনা রুখতে গড়ে তোলা হয় মন্দির উন্নয়ন কমিটি, নতুন করে সাজানো হয় কচুয়া লোকনাথ ধাম। কিন্তু করোনা সংক্রমণ ক্রমশ বাড়তে থাকায় লোকনাথ উৎসব পালন করা নিয়ে এ বার চিন্তায় ছিল প্রশাসন। সম্প্রতি এ নিয়ে বৈঠকে বসেন লোকনাথ মিশনের কর্মকর্তারা। তার পরেই ওই সিদ্ধান্ত। কচুয়া লোকনাথ মিশনের সভাপতি বিষ্ণুপদ চৌধুরী এ দিন বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে লিফলেট ছাপিয়ে ভক্তদের কাছে আবেদন করা হয়েছে, এখন মন্দিরে না আসার জন্য। এর পাশাপাশি এ বছর জন্মাষ্টমীতে ঘরে থেকেই লোকনাথের পুজো করতে ভক্তদের অনুরোধ করা হয়েছে।’’
তবে চাকলা এবং কচুয়া, দু’জায়গাতেই জন্মাষ্টমীর দিন প্রথা অনুযায়ী মন্দিরে পূজাপাঠ চলবে বলে জানিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। তবে এই প্রথম সেই উৎসব হবে ভক্তদের বাদ রেখেই। এ দিন চাকলা লোকনাথ ধামের পক্ষ থেকে মানিক হাজরা বলেন, ‘‘করোনা মহামারির আকার নিয়েছে। তাই এ সময়ে লক্ষাধিক ভক্তের আনাগোনা আটকানো গেলে আদতে তাঁদেরই রক্ষা করা হবে।’’
গত বছর দুর্ঘটনায় ছ’জনের মৃত্যুর পরে কচুয়া লোকনাথ মিশনের সদস্যাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিল রাজ্য সরকার। সেই কমিটির সদস্য বিশ্বরূপ মণ্ডল এ দিন জানান, দুর্ঘটনার পরে ভাঙা পাঁচিল মেরামতির পাশাপাশি প্রবেশপথও চওড়া করা হয়েছিল, ঢেলে সাজানো হয়েছিল মন্দির চত্বরও। তিনি বলেন, ‘‘কিছু করার নেই। লক্ষাধিক ভক্তের মধ্যে করোনা সংক্রমণ রুখতেই এ বছর জন্মাষ্টমীর উৎসব বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’