ফাইল চিত্র।
বৃষ্টি হলেই হাওড়ার নিচু জায়গায় যে জল জমবে, এটা নতুন নয়। বাসিন্দাদের দাবি, আগে জল কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বেরিয়ে যেত। কিন্তু অভিযোগ, এই বছরের ছবিটা অন্য রকম। এক বার কোনও এলাকায় জল জমলে তা সহজে বেরোচ্ছে না। নোংরা জল জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ওই পরিবেশেই থাকতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
এই অভিযোগেই হাওড়ার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের টিকিয়াপাড়া সংলগ্ন নোনাপাড়ার বাসিন্দারা শুক্রবার পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন। তাঁদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার বৃষ্টিতেই এলাকায় জল জমে গিয়েছে। শুক্রবারও যে ভাবে বৃষ্টি হয়েছে তাতে নিচু এলাকাগুলিতে কোমর সমান জল জমে থাকার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ঘণ্টাখানেক চলে এই বিক্ষোভ। পরে পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের তুলে দেয়।
এ দিন নোনাপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা এবং পাশের গলির বাড়িগুলিতে কালো জল জমে রয়েছে। রবি রাই নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘মূল নিকাশি নালায় কয়েকটি কারখানা বর্জ্য ফেলে নর্দমা বুজিয়ে ফেলেছে। কেউ দেখার নেই।’’
পুরসভা সূত্রে খবর, ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাসের পাশ দিয়ে গিয়েছে এলাকার মূল নিকাশি নালাটি। সেটির একটি শাখা নোনাপাড়ার ৯ নম্বর কালভার্ট দিয়ে বেলগাছিয়া ভাগাড়ের দিকে গিয়েছে। অন্যটি গিয়েছে ড্রেনেজ ক্যানাল ডবল ব্যারেল হয়ে পদ্মপুকুর জলায়। ৩ নম্বর ব্রাঞ্চ খাল, পচা খাল ও বিরাডিঙি খালে বর্ষার আগে পলি তোলার কাজ না হওয়ায় এই দু’টি শাখা দিয়ে এলাকার জল বেরোতে পারছে না। মূলত এই কারণেই টিকিয়াপাড়া, নোনাপাড়া, বেলগাছিয়া, সালকিয়া এবং উত্তর হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমে থাকছে দীর্ঘদিন ধরে।
হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘সেচ দফতরের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তারা খালগুলি থেকে পলি তোলার কাজ শুরু করবে। অন্য দিকে, বাইপাসের ধারে যে নিকাশি নালায় বর্জ্য জমে রয়েছে, তা-ও তোলা হবে। ওই নিকাশি নালায় রাতে ট্রাক এসে শিল্পজাত বর্জ্য ও বাজারের আর্বজনা ফেলায় সমস্যা হচ্ছে। তাই সমস্ত নিকাশি নালার উপরে ঢালাই করে দেওয়া হবে।’’ হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দাশনগরের কাশীপুরে আমরা পাম্প বসিয়ে যে ভাবে জল বার করে দিয়েছি নোনাপাড়াতেও তা করা হচ্ছে। আশা করছি, শীঘ্রই জল বেরিয়ে যাবে।’’