অশান্ত: রাতে বোমাবাজির পরে মঙ্গলবার সারাদিনই এলাকায় ছিল উত্তেজনা। গারুলিয়ার বাঁশবাগানে। ছবি: মাসুম আখতার
মাঝরাতে বোমাবাজির জেরে আতঙ্ক ছড়াল নোয়াপাড়া থানা এলাকার গারুলিয়ায়। সোমবার রাতে গারুলিয়ার বাঁশবাগান এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। যে রাস্তায় বোমাবাজি হয়েছে, তার দু’পাশেই বসতবাড়ি। ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
সম্প্রতি ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় বোমাবাজি হয়েছে। ভোটের আগে এলাকা ক্রমে তেতে উঠছে বলে অভিযোগ। আর তার জেরেই দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব বাড়ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সোমবার রাতের বোমাবাজি নিয়ে যথারীতি শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির অভিযোগ, এলাকায় তাদের সমর্থন বাড়ছে বলেই তৃণমূলের মদতে বোমাবাজি হচ্ছে। পাল্টা তৃণমূলের অভিযোগ, এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতেই বিজেপির মদতে বোমাবাজি চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জুলি চৌধুরী জানান, সোমবার রাতে তাঁদের বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল। ফলে রাত করে ঘুমোতে যান তাঁরা। কিছু ক্ষণ পরে, রাত দু’টো নাগাদ তাঁদের বাড়ির সামনে শুরু হয় বোমাবাজি। পুরো রাস্তা জুড়ে পরপর বোমা ফাটতে থাকে। জুলি বলেন, ‘‘বোমার বিকট শব্দে বাড়ি কেঁপে ওঠে। বাচ্চারা ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। ও দিকে দুষ্কৃতীরাও উল্লাস শুরু করে। তাতে আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। একটা বোমা আমাদের বাড়ির ঠিক দরজার সামনে পড়ে। আমাদের সঙ্গে কারও শত্রুতা নেই। কারা এমন করল, বুঝতে পারছি না।”
এলাকার আর এক বাসিন্দা বলেন, “বোমাবাজির শব্দে ঘুম ভেঙে গেলে দেখি, পুরো রাস্তা ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে। তার মধ্যেই চলছে দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি। ঘটনার বেশ কিছু ক্ষণ পরে নোয়াপাড়া থানায় ফোন করে খবর দিই।” তার পরেই পুলিশ আসে। তারা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পুরো ঘটনা জানে। পুলিশ জানিয়েছে, বোমাবাজির সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতীদের খোঁজে সম্ভাব্য সব জায়গায় তল্লাশি চলছে।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে আসেন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া এলাকার বিধায়ক সুনীল সিংহ। তিনি বলেন, “এই এলাকায় শেষ কবে গোলমাল-বোমাবাজি হয়েছিল, কেউ বলতে পারবে না। শান্ত এলাকা। তৃণমূল অশান্তি পাকাচ্ছে। রাতে যারা বোমাবাজি করছে, দিনে তাদেরই তৃণমূলের মিছিলে হাঁটতে দেখা যাচ্ছে। এলাকায় আমাদের সমর্থন বাড়ছে। সেই ভয়েই তৃণমূল বোমাবাজি করছে।”
নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, “এত দিন ওখানে কোনও গোলমাল হয়নি। বিজেপি ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে জেতার পর থেকেই গোলমালের শুরু। ফলে মানুষ তা বুঝতে পেরে ওঁদের থেকে সরে আসছেন। তাতেই আশঙ্কিত হয়ে ওঁরা মানুষের মনে আতঙ্ক জিইয়ে রাখার জন্য বোমাবাজি-হিংসার রাস্তা নিয়েছেন। সবাই সব দেখছেন।’’