শনিবার রাতে ধর্মতলার অবস্থানমঞ্চে জুনিয়র ডাক্তারেরা। ছবি: পিটিআই।
অনশনকারী ডাক্তারদের শারীরিক পরীক্ষা চলছে ধর্মতলার মঞ্চে। কেউ বসে আছেন। কেউ ঘুমোচ্ছেন। কেউ বাকিদের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন।
ন’বছরের শিশুকে খুনের অভিযোগে শনিবার দিনভর রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল জয়নগরের মহিষমারি এলাকা। শিশুটিকে ধর্ষণের অভিযোগও তুলেছে পরিবার। রবিবার সেখানে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। কিঞ্জল, দেবাশিস ছাড়াও কয়েক জন সেই দলে রয়েছেন।
ধর্মতলার অনশনমঞ্চে দুপুরে গিয়েছিলেন আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ দেবাশিস হালদার, কিঞ্জল নন্দেরা। সেখান থেকে তাঁরা জয়নগরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
সিনিয়র ডাক্তারেরাও অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রবিবার জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্সের তরফে তা ঘোষণা করা হয়েছে। রিলে অনশন করবেন তাঁরা। জুনিয়রদের পাশে দাঁড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। কবে থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে, তা আলোচনার মাধ্যমে স্থির করা হবে।
পুলিশের কাছে বায়ো টয়লেট তৈরির অনুমতি চেয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। এখনও কোনও জবাব আসেনি লালবাজার থেকে। ধর্মতলায় তাঁরা নিজেরাই বায়ো টয়লেট তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছেন।
বায়ো টয়লেটের জন্য কাঠ কাটছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। —নিজস্ব চিত্র।
ডাক্তারদের অনশনমঞ্চে বড় ঘড়ি টাঙানো হয়েছে। চলছে কাউন্টডাউন। রবিবার ধর্মতলায়। —নিজস্ব চিত্র।
জুনিয়র ডাক্তারেরা নিজেরাই ত্রিপল বাঁধার কাজে হাত লাগিয়েছেন। বাঁশ এবং কাঠ কেটে অস্থায়ী মঞ্চ মেরামত করা হচ্ছে।
রবিবার দুপুরে ধর্মতলার অনশনমঞ্চে জুনিয়র ডাক্তারেরা। —নিজস্ব চিত্র।
বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চের ত্রিপলের একাংশ খুলে গিয়েছে। ফলে মঞ্চের ভিতর বৃষ্টির জল পড়তে শুরু করে। কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। এখন ত্রিপল বাঁধার কাজ চলছে।
দমকা হাওয়ায় ত্রিপলের একাংশ খুলে গিয়েছিল, বাঁধার কাজে হাত লাগিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। রবিবার ধর্মতলায়। —নিজস্ব চিত্র।
ঝেঁপে বৃষ্টি নামল ধর্মতলায়। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। তার মাঝেই মেট্রো চ্যানেলের সামনে অনশন চলছে ছয় জুনিয়র ডাক্তারের।
১৫ ঘণ্টা হয়ে গেল, ধর্মতলায় অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। এখনও সরকার বা প্রশাসনের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি। ১০ দফা দাবি নিয়ে অনশন চালিয়ে যাবেন বলেই জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। যত ক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের দাবি পূরণ না হচ্ছে, তত ক্ষণ অনশন চলবে।
ডাক্তারদের অনশনমঞ্চে বড় ঘড়ি টাঙানো হয়েছে। চলছে কাউন্টডাউন। রবিবার ধর্মতলায়। —নিজস্ব চিত্র।
ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনের ১৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেল। মেট্রো চ্যানেলের ধারে অনশন করছেন ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার। তাঁদের মঞ্চে একটি বোর্ড টাঙানো হয়েছে। তাতে অনশনের সময়ের হিসাব রাখা হচ্ছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় লেখা হচ্ছে, অনশনের কতটা সময় পেরোল।
ধর্মতলায় অনশনমঞ্চে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন সিনিয়র চিকিৎসকেরাও। রবিবার সকালে অবস্থানস্থলে যাওয়ার কথা সিনিয়রদের প্রতিনিধিদের। আন্দোলনকে সমর্থনের বার্তা দিতে যাবেন তাঁরা।
অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। নিজেরাই জানালেন, তাঁরা ভাল আছেন। তবে বায়ো টয়লেট বসাতে না দেওয়ায় কিছু দূরের সাধারণ শৌচাগার তাঁদের ব্যবহার করতে হচ্ছে। তাতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্ণব, অনুষ্টুপ, তনয়ারা।
বায়ো টয়লেট নিয়ে যে জটিলটা তৈরি হতে পারে, আন্দাজই করতে পারেননি জুনিয়র ডাক্তারেরা। রবিবার সকালে অনশনমঞ্চ থেকে চিকিৎসক অর্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বায়ো টয়লেট নিয়ে জটিলতা তৈরি হবে, আমরা ভাবতে পারিনি। আমরা বায়ো টয়লেট এনেছিলাম। পুলিশ জানায়, এটা গ্রিন জ়োন। তাই এখানে বায়ো টয়লেট রাখা যাবে না। বায়ো টয়লেটের অনুমতি চেয়ে আমরা শনিবার সন্ধ্যায় লালবাজারে ইমেল করেছিলাম। এখনও জবাব পাইনি। আপাতত আমাদের কিছুটা দূরে গিয়ে একটি টয়লেট ব্যবহার করতে হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের দাবি খুব স্পষ্ট। ১০ দফা দাবির প্রতিটিই আন্দোলনের শুরু থেকে ছিল। আরজি করের মতো আর একটা ঘটনা যেন না ঘটে, সে কথা মাথায় রেখেই আমাদের দাবি।’’
ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার অনশনে বসেছেন। তবে ধর্মতলায় তাঁদের অবস্থানমঞ্চে অন্যান্য় আন্দোলনকারীরাও আছেন। জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি তুলে নিয়েছেন। কাজে যোগ দিয়েছেন শনিবার থেকেই। ছয় অনশনকারীর সহকর্মীরা সময় মতো ধর্মতলায় এসে তাঁদের সঙ্গে দেখা করে যাচ্ছেন।
ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনের ১২ ঘণ্টা অতিক্রান্ত। শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে অনশন শুরু করেছেন তাঁরা। মঞ্চেই একধারে বোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে কাউন্টডাউন চলছে। প্রতি ঘণ্টায় সময়ের হিসাব লিখে দেওয়া হচ্ছে সেই বোর্ডে।
বায়ো টয়লেটের জন্য পুলিশকে ইমেল করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। বলা হয়েছে, আমরণ অনশনের জন্য ধর্মতলার অবস্থানমঞ্চে বায়ো টয়লেট প্রয়োজন। পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য দু’টি আলাদা বায়ো টয়লেটের অনুমতি চাওয়া হয়েছে পুলিশের কাছে। জুনিয়র ডক্টরস’ ফ্রন্টের তরফে ইমেল করা হয়েছে।
অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের মঞ্চে ‘বায়ো টয়লেট’ নিয়ে ঢুকতে দিচ্ছে না। আন্দোলনকারী চিকিৎসক পুলস্ত্য বলেন, ‘‘বায়ো টয়লেটের জন্য আমরা পুলিশকে ইমেলও করেছিলাম। আমাদের সে সব আনতে দেওয়া হচ্ছে না। বলা হয়েছে, ওদের বড়বাবু আসার আগে বায়ো টয়লেট নিয়ে কিছু বলা যাবে না। তিনি ১১টার পর আসবেন। চিকিৎসার সময় কি আমরা বলি, বড়রা কেউ না এলে আমরা পরিষেবা দেব না? এটা অমানবিক, নিন্দনীয়, ঘৃণ্য।’’
শনিবার রাতে সাংবাদিক বৈঠক থেকে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার অর্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল সরকারকে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পর পেলাম শুধুই হুমকি। আমাদের উৎসবে ফিরতে বলা হচ্ছে, কিন্তু আমরা সেই মানসিক অবস্থায় নেই। এখন থেকেই আমরণ অনশনে বসছি আমরা। কাজে ফিরছি কিন্তু খাবার খাব না।’’