প্রতীকী ছবি।
সাড়ে তিন বছরের ছেলেকে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া বাবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আলিপুর ফাস্ট ট্র্যাক আদালত। সাজাপ্রাপ্তের নাম স্বপন সমাদ্দার। বৃহস্পতিবার ওই আদালতের বিচারক অসীমা পাল এই সাজা ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার জয়দেবপল্লির বাসিন্দা স্বপনের সঙ্গে স্ত্রী সবিতার বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই অশান্তি শুরু হয়। দম্পতির এক ছেলে ও মেয়ে। অশান্তির কারণে বছর ছয় আগে স্ত্রী ও সন্তানদের ছেড়ে চলে যায় স্বপন। এর পরেই সংসারের খরচ টানতে টালিগঞ্জ এলাকায় পরিচারিকার কাজ নেন সবিতা। অভিযোগ, স্বপন আলাদা হয়ে গেলেও স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েকে খুনের হুমকি দিত। বিভিন্ন সময়ে খুনের ভয় দেখিয়ে স্ত্রী সবিতার থেকে টাকাও নিত সে। পুলিশ সূত্রের খবর, সবিতা টালিগঞ্জের যে বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন, ২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর সেখানে গিয়ে হাজির হয় স্বপন। অভিযোগ, সবিতার কাছ থেকে টাকা না পেয়ে ছেলেমেয়েকে খুন করার শাসানি দিয়ে যায় সে।
পুলিশ জানায়, পরের দিন ক্যানিংয়ের জয়দেবপল্লি গ্রামে যায় স্বপন। ছেলে সায়ককে ভাল খাবার কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। প্রথমে ছেলেকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে। তার পরে দেহটি কয়েক টুকরো করে একটি প্লাস্টিকে ভরে। স্বপনের পরিকল্পনা ছিল মাতলা নদীতে প্লাস্টিকে ভরা দেহটি ভাসিয়ে দেওয়ার।
এ দিকে শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামের সবাই তাকে খুঁজতে বেরোন। এক গ্রামবাসী দেখেন, একটি প্লাস্টিকে মোড়া কিছু নিয়ে মাতলা নদীর দিকে যাচ্ছে স্বপন। তখনই সকলে চেপে ধরে তাকে। প্লাস্টিকের ব্যাগ খুলে দেখা যায় কয়েক টুকরো করা সায়কের দেহ। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। গ্রেফতার করা হয় স্বপনকে। সরকারি আইনজীবী শিবনাথ অধিকারী বলেন, ‘‘স্বপনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।’’