প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যে দুর্গাপুজোর অনুমতি মিলেছে। তা হলে ছয় শহর থেকে সরাসরি উড়ান নামার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রাখার যুক্তি কী? পুজোর মাস শুরুর মুখে এই প্রশ্নই করছেন প্রবাসী বাঙালি থেকে শুরু করে উড়ান সংস্থা বা ট্র্যাভেল এজেন্টরা। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো, করোনার প্রকোপের মধ্যেই এ বার পুজো হবে কলকাতায়। শারীরিক দূরত্ব মেনে দর্শকেরা পুজো দেখতেও যেতে পারবেন।
কিন্তু, দেশের ছ’টি শহর থেকে সরাসরি কলকাতায় আসার উড়ানের ক্ষেত্রে এখনও রাজ্যের নিষেধাজ্ঞা চলছে। সপ্তাহে শুধু সোম, বুধ ও শুক্রবার ওই ছ’টি শহর থেকে উড়ান আসছে কলকাতায়। ট্র্যাভেল এজেন্ট ও উড়ান সংস্থার কর্তাদের মতে, পুজোর মাস মুনাফার সময়। এই সময়ে কলকাতা থেকে সর্বাধিক যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করে বিমান। প্রবাসী বাঙালিরা সপরিবার আসেন শহরে। আবার অনেকে বাইরে বেড়াতে যান। তাই এই নিষেধাজ্ঞা যদি তুলে নেওয়া না হয়, তা হলে
আর্থিক ভাবে ভয়ঙ্কর ক্ষতি হবে। সমস্যায় পড়বেন অনেক প্রবাসী বাঙালিও। একটি উড়ান সংস্থার এক কর্তার কথায়, ‘‘আমরা বিভিন্ন মহলের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছি। শহরে পুজো হলে সেই পুজো দেখতে অন্য রাজ্য থেকে বাঙালিদের আসতে আপত্তি কোথায়? অনেকে তো শুধু শহরের পুজো দেখতে আসেন না, তাঁদের কাছে এটা আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে পুনর্মিলনের সময়ও বটে।’’
আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহে ফের পিছোতে পারে শেষ মেট্রোর সময়
ট্র্যাভেল এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার পূর্ব ভারতের চেয়ারম্যান মানব সোনি রাজ্যের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র এবং বর্তমান মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে সপ্তাহে সাত দিন উড়ান শুরু করে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। মানবের কথায়, ‘‘পুজোর মাসে সবচেয়ে বেশি যাত্রী হয়।এমনিতেই বিমান পরিবহণের হাল খারাপ। সামান্যতম ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগগুলো কাজে লাগানো জরুরি।’’মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন উত্তরবঙ্গে।
আরও পড়ুন: ছাত্রের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার, খুনের অভিযোগ
আজ, বৃহস্পতিবার তাঁর শহরে ফেরার কথা। উড়ান সংস্থাগুলির আশা, পরের সপ্তাহে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, পুণে, নাগপুর ও আমদাবাদ থেকে সপ্তাহে সাত দিনই উড়ান আসার অনুমতি দেবে রাজ্য। ইন্ডিগো এখন সাত দিনই সরাসরি এই ছ’টি শহরে উড়ান চালাচ্ছে। কারণ, কলকাতা থেকে উড়ান যাওয়া নিয়ে রাজ্যের আপত্তি নেই। আপত্তি ওই ছ’টি শহর থেকে সরাসরি উড়ান আসা নিয়ে।
আরও পড়ুন: ৩১ বছর পার, মাদক মামলায় মুক্ত বৃদ্ধা
এক সময়ে একটানা প্রায় দু’মাস সরাসরি উড়ান বন্ধ থাকার পরে সেপ্টেম্বরের প্রথম থেকে সপ্তাহে তিন দিন সরাসরি উড়ান নামার অনুমতি দেয় রাজ্য। সবাই ভেবেছিলেন, শুধু সেপ্টেম্বরের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু, মাসের শেষে খেয়ালহয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য।বিভিন্ন উড়ান সংস্থা সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই পুজোয়
কলকাতায় আসা নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। প্রধানত দিল্লি, মুম্বই থেকে সোম, বুধ ও শুক্রবারের কলকাতার উড়ানের প্রায় ৭৫ শতাংশ ভর্তি হয়ে গিয়েছে। কলকাতার সিআইটি রোডের বাসিন্দা জয়া মণীশ চেন্নাইয়ে থাকেন। প্রতি বছর পুজোয় কলকাতায় আসেন। তাঁর কথায়, ‘‘সপ্তাহে তিন দিন উড়ান চললে পরিকল্পনা করা মুশকিল।
আমার পক্ষে কলকাতা থেকে রবিবার চেন্নাই ফেরাটা সুবিধার। অপেক্ষা করছি। দেখা যাক কী হয়।’’ট্র্যাভেল এজেন্ট ফেডারেশনের পূর্ব ভারতের চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবির কথায়, ‘‘সপ্তাহে সাত দিনই উড়ান চালু হয়ে যাবে ভেবে বহু মানুষ অনলাইনে টিকিট কেটেছেন। সেটা চালু না হলে তাঁদের টাকা উড়ান সংস্থার ঘরে জমা পড়ে যাবে। তাই আমরা ওই তিন দিন ছাড়া টিকিট বিক্রি করিনি। সাত দিন উড়ান চালানোর আর্জি নিয়ে আমরাও সরকারকে চিঠি দিচ্ছি।’’