শহর নিউ টাউন রয়েছে ‘নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (এনকেডিএ)-র অধীনে। ফাইল ছবি।
অবশেষে পঞ্চায়েত এলাকা থেকে মুক্ত হতে চলেছে শহর নিউ টাউন।
রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার সোমবার জানান, এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ শুরু হয়েগিয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পঞ্চায়েত দফতর জানিয়েছিল, নিউ টাউনের বেশ কিছু এলাকা পঞ্চায়েতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। পরে দেখা যায়, সেই সব জায়গার মধ্যে শহর নিউ টাউনের বিস্তীর্ণ এলাকাও ঢুকে পড়েছে। তার পরেই এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত দফতর এবং যে দফতরের অধীনে ওই সব এলাকা নতুন করে যুক্ত হবে, সেই দফতর-সহ সবপক্ষকে নিয়ে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। নিউ টাউনের ওই সব এলাকা আলাদা করে দেওয়া হবে পঞ্চায়েত দফতর থেকে। তার জন্য আইনি পদক্ষেপ শুরু হয়ে গিয়েছে। মানুষের স্বার্থেই এই ব্যবস্থা।’’
পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েতের কোনও এলাকা ইচ্ছে মতো কোনও ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে তুলে দেওয়া যায় না। তার জন্য আইনি পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। শহর নিউ টাউন রয়েছে ‘নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (এনকেডিএ)-র অধীনে। যা আবার পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীন। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও এর আগে জানিয়েছিলেন, শহরের ওই সব এলাকা আলাদা করার জন্যপঞ্চায়েত দফতরকে চিঠি লেখা হয়েছে। তার পর থেকেই বাসিন্দাদের মধ্যে এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখা গিয়েছিল। এমনকি, তাঁদের প্রতিবাদের জেরেই পুরমন্ত্রী ওই মন্তব্য করেন, এমনটা দাবি করেবাসিন্দাদের নিউ টাউনের রাস্তায় আবির খেলতেও দেখা যায়।
উল্লেখ্য, গত বছর পঞ্চায়েত দফতরের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, নিউ টাউন সংলগ্নজ্যাংড়া-হাতিয়াড়া (২) পঞ্চায়েতের অধীনে আসতে চলেছে যে সব এলাকা, তার মধ্যে নিউ টাউন শহরের বহু ব্লকও রয়েছে। আটটি আসন ও ১২টি বুথে ভাগ করা হয়েছিল ওই সব এলাকা। এমনকি,পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতি নিতেও শুরু করে দিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু করেন। রীতিমতো গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে তাঁরা পঞ্চায়েত এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে জমা দেন।
নিউ টাউনের বাসিন্দাদের একটি সংগঠন ‘নিউ টাউন ফোরাম’-এর চেয়ারম্যান সমরেশ দাস এ দিনবলেন, ‘‘এটা আমাদের বাসিন্দাদের সম্মিলিত লড়াইয়ের ফল। সরকারকে ধন্যবাদ, তারা আমাদের সমস্যার কথা উপলব্ধি করেছে। আমরা একটিউন্নত শহরে থাকি। দেশের একাধিক উন্নত শহরের হারে আমরা কর দিই। তা হলে আমরা কেন পঞ্চায়েত এলাকায় থাকব?’’
বাসিন্দাদের মধ্যে থেকে বিরোধিতা শুরু হওয়ায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগ এবংএনকেডিএ যৌথ ভাবে নতুন করে এলাকার সীমানা সমীক্ষা শুরু করে। সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের তরফে পঞ্চায়েত দফতরকে জানিয়েও দেওয়া হয় যে, নিউ টাউনের ওই সব এলাকা ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে।
এ দিন জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন,‘‘পঞ্চায়েত দফতরের সবুজ সঙ্কেতের দিকে আমরাও চেয়ে আছি। ওরা বিজ্ঞপ্তি জারি করলে আমরা ওই সব এলাকা ছাড়ার কাজ বাস্তবায়িত করব।’’