ফাইল ছবি
আশপাশে ধু ধু মাঠ। মাঝখানে এক সুবিশাল বাড়ি। চার ধারে সিসি ক্যামেরা বসানো। লোহার ফটকে সব সময়ে তালা। অভিযোগ, কখনও -সখনও ভিতরে উৎসব বা পিকনিক হয়। তবে স্থানীয় মানুষের সেখানে প্রবেশাধিকার নেই।
নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগে ধৃত মন্ত্রী তথা শাসক দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পরে, রাজারহাটের ধাড়সা-মোক্তারপুর মৌজার ওই বিরাট বাগানবাড়িও গ্রামবাসীর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। কারও কারও দাবি, ওই বাড়ি তৈরির সময়ে পার্থকে এক বার দেখা গিয়েছিল। বাড়িটি তাঁর ঘনিষ্ঠ কারও বলেও অনেকের মত। কেউ কেউ অবশ্য দাবি করেছেন, বাড়িটি বেনামে পার্থরই।
নিউ টাউনের পিছনে কার্যত জনমানবহীন ধূ ধূ মাঠে রয়েছে দোতলা বাড়িটি। এক দিকে পাথরঘাটা পঞ্চায়েত, অন্য দিকে রাজারহাট-বিষ্ণুপুর (২) নম্বর পঞ্চায়েত। বাড়ির মালিক কে? ভিতরে থাকা নিরাপত্তাকর্মী ও মালি দাবি করলেন, তাঁরা বাড়ির মালিকের নাম জানেন না। তাঁর ফোন নম্বরও তাঁদের কাছে নেই!
সাত-আট বছর আগে ওই বাড়ি তৈরির সময়ে যাঁরা সেখানে ইমারতি দ্রব্য সরবরাহ করেছিলেন, তেমন কয়েক জনের দাবি, বাড়িটির মালিক এক ব্যবসায়ী। বাড়িতে ছ’-সাতটি ঘর রয়েছে। কেউ বলছেন, বাড়ির মালিক সল্টলেকের বাসিন্দা, কেউ বলছেন নিউ টাউনের একটি আবাসনে থাকেন মালিক। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। তবে ওই ব্যক্তি পার্থর ঘনিষ্ঠ কি না, তা তাঁরা জানেন না বলেই দাবি করেছেন।
রাজারহাট-বিষ্ণুপুর (২) নম্বর পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা তথা এক পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী রহিম গাজির দাবি, তিনিও ওই বাড়ির সঙ্গে পার্থর যোগাযোগ রয়েছে বলে শুনেছেন। রহিমের কথায়, ‘‘শুনেছি, বাড়ি তৈরির আগে যখন জমিটি ঘেরা ছিল, তখন এক বার মন্ত্রী এসেছিলেন। আমি নিজে কিছু দেখিনি। মন্ত্রীর সঙ্গে ওই বাড়ির যোগাযোগ আছে বলে গ্রামে এখন চর্চা চলছে।’’
বাড়িটি কার, গ্রামের নেতা হয়ে তাঁর খবর রাখেন না? বাড়িতে কে বা কারা কী উদ্দেশ্য আসেন, সে খবর তো জনপ্রতিনিধিদের রাখা উচিত? রহিমের দাবি, ‘‘বেশি খোঁজ নিলে সমস্যা হতে পারে ভেবে মাথা ঘামাইনি। পঞ্চায়েতকে বলব খোঁজ নিতে। তবে শুনেছি, সম্প্রতি এক বিজেপি নেতা ও তাঁর দল বাড়িতে পিকনিক করে গিয়েছেন।’’
যদিও নিরাপত্তাকর্মীরা নাম-ফোন নম্বর না দিতে পারায় মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ফলে রটনার মধ্যে ঘটনা কতটা, সে নিয়েই এখন জোর জল্পনা ধাড়সা-মোক্তারপুরে।