প্রতীকী ছবি।
করোনার আতঙ্কের মধ্যে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের ঘূর্ণিঝড়ের চোখরাঙানি। গত বছর আমপান যে তাণ্ডব চালিয়েছিল, তা থেকে শিক্ষা নিয়েই এ বার দুর্যোগের মোকাবিলায় কোমর বাঁধছে লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, শহরের প্রতিটি থানাকে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট এলাকার সিইএসসি কর্মীদের নামের তালিকা তৈরি করতে, যাঁরা ওই ঝড়ের দিন কাজে নামতে পারবেন। সেই সঙ্গে ঝড়ের জেরে বিদ্যুৎ পরিষেবা বিকল হয়ে গেলে তা মেরামতির জন্য সিইএসসি-র যে ওভারহেড এবং আন্ডারগ্রাউন্ড কর্মীরা কাজে নামবেন, তাঁদের নামের তালিকাও তৈরি করতে বলা হয়েছে। লালবাজার জানিয়েছে, প্রতিটি থানাকে আজ, রবিবারের মধ্যে ওই তালিকা তৈরি করে ডিভিশনাল ডিসি-দের কাছে পাঠিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবে সিইএসসি-র সঙ্গে বৈঠকেও বসছেন লালবাজারের কর্তারা। ঝড়ের দাপটে গাছ, বাতিস্তম্ভ বা বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেলে তা দ্রুত সরিয়ে দেওয়ার জন্যই এই তৎপরতা। বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় ইলেকট্রিশিয়ানদের সঙ্গেও থানাগুলিকে যোগাযোগ রাখতে বলেছেন লালবাজারের কর্তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, ঝড়ের পরে পুরসভার বাহিনীকে যাতে সময়মতো পাওয়া যায়, তার জন্য স্থানীয় পুর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে। পুলিশের একাংশের মতে, এ বারের পরিস্থিতি যাতে গত বারের মতো না হয়, তার জন্যই এই তৎপরতা। গত বছর শহরবাসীর অভিযোগ ছিল, ঝড়ের পরে সিইএসসি এবং পুরসভার কর্মীদের দেখা পাওয়া যায়নি। ফলে শহরকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে প্রবল বেগ পেতে হয় প্রশাসনকে। এ বারও যাতে তার পুনরাবৃত্তি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই পুরসভা, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এবং সিইএসসি-র সঙ্গে কথা বলছে লালবাজার।
দিন কয়েক আগেই রাজভবনের সামনে বৃষ্টির জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, এই ধরনের ঘটনা এড়াতে প্রতিটি থানাকে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিপজ্জনক ভাবে হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে কি না, তা খুঁজে বার করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
লালবাজার জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে বেশ কিছু নির্দেশ দেন তিনি। যেমন, পুরনো ও জরাজীর্ণ বাড়িগুলির আবাসিকদের ফোন নম্বর-সহ নামের তালিকা তৈরি করতে বলেন। ঝড়ের আগে ওই আবাসিকদের এলাকার কোনও স্কুল বা কলেজ ভবনে সরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। দুর্যোগ-পরবর্তী পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস এবং খাদ্যসামগ্রী মজুত রাখা হয়, এমন দোকান বা গুদাম চিহ্নিত করার কাজও শুরু করেছেন থানার আধিকারিকেরা।
পুলিশ জানিয়েছে, লালবাজারের নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন এলাকার হাইমাস্ট বাতিস্তম্ভ থেকে পুরকর্মীদের সাহায্যে আলো খুলে ফেলার কাজ শুরু করা হয়েছে। একই ভাবে হোর্ডিং খোলার জন্যও পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আজ, রবিবারের মধ্যে উঁচুতে থাকা সমস্ত হোর্ডিং খুলে ফেলা যাবে বলে আশা পুলিশের।